রেলিগেশন লিগের লজ্জা এড়াতে পারবে মোহামেডান?

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:৫৩ পিএম, ২৯ মার্চ ২০২৩

মোহামেডানের অবস্থা কি এবারও আগের বারের মত হবে? নাকি এবার আরও খারাপ হবে? ইতিহাস জানাচ্ছে, গতবারও ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার লিগ খেলতে পারেনি মোহামেডান। এবারও কি সেরা ৬ দলে জায়গা করে নিতে পারবে না সাদা কালোরা?

কাগজে-কলমে ঐতিহ্যবাহী দলটির চেহারা যেমনই দেখাক না কেন, বাস্তবতা হচ্ছে ঢাকা তথা দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অত্যন্ত জনপ্রিয় ও বৃহৎ এই দলটি এবারের প্রিমিয়ার লিগে একদম তলানিতে। এখান থেকে সুপার লিগ খেলার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। বরং রেলিগেশন লিগ খেলার সম্ভাবনিই খুব বেশি। ভাববেন না বাড়াবাড়ি হয়ে গেল।

প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের চালচিত্র তাই বলছে। মোহামেডানের অবস্থা খুব খারাপ। ৫ ম্যাচে জয়ের দেখা মেলেনি। ৪টিতে পরাজয় সঙ্গী। রুপগঞ্জ টাইগার্সের সাথে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ম্যাচে জুটেছে এক পয়েন্ট। এখন পর্যন্ত এই একটি পয়েন্টই মোহামেডানের অর্জন।

প্রসঙ্গতঃ এবারও আগের বছরের মত অনেক ঘটা করে খেলোয়াড় পরিচিতি ও জার্সি উন্মোচন করা হয়েছিলো। গতবারও একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনেক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ, তাসকিন, মিরাজ ও সৌম্য সরকারকে দলে ভেড়ানোর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছিল।

কথা ছিল সাকিব, মুশফিক, মিরাজ, তাসকিনরা সুপার লিগ খেলবেন; কিন্তু শেষ পর্যন্ত মোহামেডান সুপার লিগই খেলতে পারেনি। তারা মিচ্যুয়াল এনওসি নিয়ে অন্য দলে খেলেছিলেন পরে।

এবারও ঠিক তাই হতে যাচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছিল আইপিএল খেলতে গেলে সাকিবের পক্ষে মোহামেডানের হয়ে প্রিমিয়ার লিগ খেলা সম্ভব হবে না। যেহেতু টি-টোয়েন্টির পাশাপাশি টেস্ট দলেও আছেন, তাই মিরাজের পক্ষেও সুপার লিগের আগে সাদা-কালো জার্সি গায়ে চেপে মাঠে নামা সম্ভব হবে না।

এখন মোহামেডানের যা অবস্থা, তাতে সাকিব ও মিরাজের হয়ত এ বছর আর সাদা-কালো জার্সি গায়ে খেলার সম্ভাবনা নেই। কারণ মোহামেডানের সুপার লিগ খেলার সম্ভাবনাই যে নাই!

Mohammedan

৫ খেলায় পয়েন্ট মোটে ১। বাকি ৬ খেলায় অন্তত ৫টিতে জিততেই হবে। এখন মোহামেডানের যে দৈন্য দশা, তাতে সে সম্ভাবনাও সুদূর পরাহত। শেষ ম্যাচে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কাছে মাত্র ৮০ রানে গুটিয়ে ১০ উইকেটে হেরেছে মোহামেডান। ৩৯ বছর বয়সে এসে প্রায় হেটে হেঁটে ৩/৪ পা দৌড়ে এসে ৫ উইকেট দখল করেছেন মাশরাফি।

ব্যাটিং, বোলিং দুই শাখাইা বেশ অনুজ্জ্বল। ব্যক্তিগত পর্যায়েও এমন কোন আহামরি নৈপুণ্য নেই, যা দিয়ে দলকে টেনে নেয়া যায়। অধিনায়ক ইমরুল, সৌম্য সরকার, অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শুভাগত হোম, পশ্চিম বঙ্গের অনুষ্টুপ মজুমদার, মাহিদুল ইসলাম অংকন, খালেদ আহমেদ, কামরুল ইসলাম রাব্বি ও এনামুল জুনিয়রের মত প্রতিষ্ঠিত পারফরমাররাও ব্যর্থতার মিছিলে নাম লেখাচ্ছেন।

সেই প্রথম ম্যাচে গাজী গ্রুপের রান পাহাড়ের (৩৪৯) নিচে চাপা পড়া দিয়ে শুরু, আর সর্বশেষ মাশরাফির স্লো মিডিয়ামের মুখে মাত্র ৮০ রানে মুখ থুবড়ে পড়া, সব মিলিয়ে মোহামেডানের করুণ অবস্থা। না ব্যাটাররা ভাল খেলে রান করছেন, না বোলাররা জ্বলে উঠে দল জেতাতে পারছেন। কিছুই হচ্ছে না। রীতিমত এক বিভীষিকাময় অবস্থা মোহামেডান শিবিরে। লিগের প্রায় অর্ধেকটা শেষ হয়ে গেছে, মোহামেডান জয়ের মুখ দেখেনি, এমন নজিরও খুঁজে পাওয়া কঠিন।

ইতিহাস জানাচ্ছে, এর আগে ১৯৯৮ সালেও এমন এক অবস্থা হয়েছিল। সেবার মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আমিনুল ইসলাম বুলবুল, হাসিবুল হোসেন শান্ত সহ প্রায় সবাই মোহামেডান ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। শুধু মোহাম্মদ রফিক আর সেলিম শাহেদই ছিলেন দলে। সেই দল একটানা ৫ ম্যাচে হেরেছিল। সেবার লাইনআপই ছিল দুর্বল, কমজোরি। এবারতো আর তা নেই। কাগজে কলমে মোহামেডান বেশ সমৃদ্ধ, শক্তিশালী।

এআরবি/আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।