এনএসসির ৬ মাসের ফিরিস্তিতে নেই খেলাধুলার কথা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৬ মাসে ক্রীড়াঙ্গনে কি সংস্কার হয়েছে, সেই প্রশ্ন সবার মুখেমুখে। ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হলে এই সরকারের হাতে সময় আছে আর ১০ মাস। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার গুছিয়ে আনলেও সে তুলনায় ক্রীড়াঙ্গন অনেক পিছিয়ে।
গত ৬ মাসে মাত্র ১৬টি ফেডারেশনে অ্যাডহক কমিটি দিতে পেরেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। বাকি ৩৯টি ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে কেবল সক্রিয় ফুটবল ও ক্রিকেট। অনিশ্চিত সময় পার করছেন অন্যগুলোর কর্মকর্তারা। না বিদায় করা হয়েছে আওয়ামী ঘরানার সংগঠকদের, না করা হয়েছে ওই ফেডারেশনগুলো সচল।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাজে প্রাধান্য থাকা উচিত মাঠের খেলা সচল রাখা। আর সে কাজের জন্য দরকার দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে ফেডারেশনগুলোর পুনর্গঠন। ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলো হচ্ছে খেলাধুলার প্রাণ। সেই প্রাণগুলো এখন নিষ্প্রাণ। এই সরকারের প্রথম ৬ মাসে সবচেয়ে অবহেলিত থেকেছে মাঠের খেলার বিষয়টি। তারুণ্যের উৎসবের মাধ্যমে ৪৩টি ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনকে খেলামুখী করা গেলেও অন্যসব কার্যক্রমই ঝিমিয়ে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ৬ মাসে কি কর্মকাণ্ড করেছে মঙ্গলবার তার একটি সংক্ষিপ্তসার তৈরি করেছে। যদিও এই সংক্ষিপ্ত সারে উল্লেখ করা হয়েছে শুধু জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দীর্ঘ পেন্ডিং বিশেষ প্রকৃতির কর্মকান্ড। সেখানে খেলাধুলার বিষয়ে কিছুই নেই। এই বিশেষ প্রকৃতির কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্তসারের পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ জানতে চায় মাঠের খেলা সচল করতে এই ৬ মাসে কি করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ!
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এই ‘দীর্ঘ পেন্ডিং বিশেষ প্রকৃতির কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্তসার’-এর বিবরণ দেওয়া হয়েছে ১৮টি পয়েন্টে। যেখানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ প্রথম উল্লেখ করেছে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যদের অনুকূলে প্রদান করা সম্মানী ভাতা ৩ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করা। জানুয়ারি থেকেই নতুন এই ভাতা দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ ২২ বছর পর নেওয়া জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এই উদ্যোগ প্রশংসারই দাবি রাখে।
অনেকের চাকরি রাজস্বখাতে আনা, শূন্যপদে সরাসরি নিয়োগের ব্যবস্থা, চাকরিতে স্থায়ীকরণের উদ্যোগ নেওয়া, অনেককে পদোন্নতি দেওয়া, ২৭টি ফেডারেশনের কাছ থেকে দুই বছরের অডিট প্রতিবেদন আনা, অন্যদের অনুকূলে বরাদ্দকৃত অনুদান ছাড়করণ স্থগিত করা, সুশাসন নিশ্চিতের উদ্যোগ নেওয়া, ক্রয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনার উদ্যোগ নেওয়া, নির্মাণকাজের গুণগত মান নিশ্চিতকরণ, কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ প্রশাসনিক কার্যক্রমের কথাই তুলে ধরেছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে মাঠের খেলা সক্রিয় করার পরিকল্পনা ও উদ্যোগগুলোও যে জানতে চান ক্রীড়ামোদীরা।
আরআই/আইএইচএস/