লোকসানি প্রতিষ্ঠান বিটিসিএল এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে: মন্ত্রী

এসময়ের লোকসানি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ঢাকার ইস্কাটন গার্ডেনে বিটিসিএলের প্রধান কার্যালয়ে বিটিসিএল এবং বাংলালিংকের মধ্যে টাওয়ার শেয়ারিং সংক্রান্ত সার্ভিস লেভেল এগ্রিমেন্টে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল মতিন এবং বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আজ এ চুক্তি সই অনুষ্ঠান সত্যিই একটা মাইলফলক। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে টিএন্ডটির যাত্রা শুরু, ১৯৭৩ সালে আইটিইউয়ের সদস্যপদ অর্জন এবং ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূকেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগের যাত্রা শুরু হয়। বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ড (বিটিটিবি) ছিল একসময় এদেশের টেলিযোগাযোগের মেরুদণ্ড।
মোস্তাফা জব্বার প্রধানমন্ত্রী গৃহীত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় জাতীয় অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, এর আগে এ দুটো প্রতিষ্ঠান অপটিক্যাল ফাইবার অবকাঠামো শেয়ার করেছে। বিটিসিএল যেমন তার রিসোর্স শেয়ার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তেমনই বাংলালিংক সেই রিসোর্স ব্যবহার করে আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। এতে উভয়পক্ষই লাভবান হচ্ছে। ল্যান্ডফোনে মানুষের কথা বলা কমে যাওয়ার কারণে এর গ্রাহক কমে যাওয়ায় বিটিসিএল ৪/৫ বছর আগেও বছরে ৪০০ কোটি টাকা লস করেছে। এখন লাভের মুখ দেখছে। মানুষ এখন আমাকে বলছে তার এলাকায় টেলিফোন সংযোগ দরকার, সঙ্গে দ্রুতগতির জিপন ইন্টারনেটও চাচ্ছে। প্রযুক্তি ও পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারায় বিটিসিএল আজ ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদার তার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব থাকাকালীন সময়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন ও বিটিসিএলের ঘুরে দাঁড়ানোকে অভিনন্দিত করেন।
তিনি বলেন, আমরা সব সময়ই অবকাঠামো শেয়ারিংকে স্বাগত জানাই। বাংলা লিংক ও বিটিসিএলের দৃষ্টান্ত অন্যরা অনুসরণ করবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
এ চুক্তির আওতায় বিটিসিএলের নেটওয়ার্ক অবকাঠামো ব্যবহার করবে বাংলালিংক। উদ্যোগটি বাংলালিংকের ফোরজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে সহায়তা করে প্রতিষ্ঠানটির সেবার মান বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। এর ফলে শক্তি সাশ্রয়ের পাশাপাশি জাতীয় সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল চুক্তির বিষয়ে বলেন, গত বছর থেকে আমরা বাংলালিংকের সঙ্গে আমাদের ফাইবারও শেয়ার করে আসছি। উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি ইতিবাচক ফলাফল বয়ে এনেছে। এখন দেশ এমন একটি সময় পার করছে যখন জাতীয় ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অবকাঠামো ভাগাভাগি একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে।
বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস বলেন, আমরা সবসময় নেটওয়ার্ক শেয়ারিংয়ের সুযোগকে স্বাগত জানাই। এর মাধ্যমে গ্রাহকদের উন্নত সেবা দেওয়ার পাশাপাশি সম্পদ ও অবকাঠামোর উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব। গত এক বছরে আমরা নেটওয়ার্কে ৩ হাজার ৩০০টিরও বেশি বেইজ স্টেশন যোগ করেছি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান।
এইচএস/এমকেআর/জেআইএম