খুলনার উল্লাস পার্কে যা আছে দেখার মতো

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৫৮ পিএম, ০২ মে ২০২৫

সুরাইয়া ইয়াসমিন সুমি

সময় বয়ে যায় কত দ্রুত। পরীক্ষার একমাস চলে যাওয়ার জন্য কতই না চাওয়া। সব ক্লান্তি শেষে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছি। কত চাপ! সব কাটিয়ে শেষ পরীক্ষার দিনই বাসায় এসে শান্তি। ক্লান্তিভাব কাটতেই মিতুর ফোন! রেডি হও বের হবো! ৫ মিনিটেই রেডি। ঠিক হলো ঘুরতে যাবো খুলনার উল্লাস পার্কে। আগে যেটা মজগুনী পার্ক নামে পরিচিত ছিল। বেশি দূরে নয়, কাছাকাছি।

খুলনা থেকে যে কোনো মাধ্যমেই যাওয়া যায়। তবে আমরা দৌলতপুর থেকে যাওয়ায় ইজিবাইকে নিলো জনপ্রতি ২০ টাকা করে। আমরা মোট ছয়জন ছিলাম। পার্কের ভেতর প্রবেশমূল্য ১০০ টাকা। ঢুকতেই চোখে পড়বে ডান ও বাম দিকে ছোটদের রাইড। ছোটরা দারুণ একটা সম কাটাতে পারবে এখানে। সামনে আর একটু এগিয়েই চোখে পড়লো জলাধার। যাকে পুকুরও বলা চলে। তার সামনেই বসার জায়গা। যেখানে বসে পরিবেশের শীতলতা অনুভব করা যায়।

পাশেই রয়েছে দোলনা, যেখানে বসে থাকা যায়। দোলনার সোজাসুজি চোখে পড়বে নাগরদোলা আর ছোটদের টুংটুং বাজনা বাজানোর মতো। এটা ছোটরা যেমন উপভোগ করে, বড়রাও তেমন। আমি আর আমার বান্ধবীরা তো এটাতেই বেশি মজা পেয়েছি। ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেলো।

সুন্দর পরিবেশে আছে নয়নতারাসহ হরেক রকম ফুল। সামনে আরও এগিয়ে গেলে চোখে পড়বে ব্যাঙের মতো কিছু। মিতু তো ব্যাঙটাকে দেখে অনেক খুশি হয়েছিল। ব্যাঙের সাথে ছবিও তুললো। আছে কাঠের তৈরি ঘর। ভেতরে বসার জায়গা। ওপরে উঠলে তো পুরো পার্কটাকে ভালোভাবে দেখা যায়। আমরা সেটাতে উঠতে পারিনি মানুষ থাকায়। তাই আমরা সামনে চলে গেলাম।

চোখে পড়লো হরেক রকম ব্যায়ামের সরঞ্জাম। আমরা একেকজন তো অনেক মজা করেছি। দেওয়ালজুড়ে ছিল সব কার্যপদ্ধতি। কোনটা কোন কাজে কিভাবে ব্যবহার করতে হয়! তার পাশের দেওয়ালে ছিল আরও সুন্দর ছবি আঁকা। পাখি, বেলুন, ময়ূর এমনকি প্রজাপতি। ছবি তুললাম সবাই। সুন্দর একটা দৃশ্য মনকে পুলকিত করেছিল। সূর্য অস্ত যাওয়ার অসাধারণ প্রতিফলন পানির ওপর। এককথায় মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

বোটে ওঠার জন্য কিছুতেই মিতু আর আনিকা রাজি হলো না। তারা সাঁতার জানে না। যদি পড়ে যায়। আমি, বৃষ্টি, সুমাইয়া আর ছোট বোন উঠলাম। জনপ্রতি ৫০ টাকা করে। ৩০ মিনিটের ওপর গেলে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হবে। সাইকেলের মতো প্যাডেল দিয়ে চালাতে হয়। আমি আর ছোট বোন পারি না। তাই বৃষ্টি আর সুমাইয়া মিলেই চালিয়েছে। আমরা নীরব দর্শকের মতো উপভোগ করেছি।

সময় শেষ হলে তীরে এসে নেমে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। বের হওয়ার আগেই ছোট একটি শিশুকে দেখলাম জাম্পিংয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে ছোট ছোট পা দিয়ে। ভালোই লাগছিল। আমরা ধীরে ধীরে বের হয়ে গেলাম গন্তব্যে ফেরার জন্য। ইজিবাইকে উঠে পড়লাম জনপ্রতি ২০ টাকা দিয়ে। ঘোরার সময় শেষ হয়ে গেলো, তবুও যেন রেশ থেকে গেলো।

লেখক: শিক্ষার্থী, সম্মান, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা।

এসইউ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।