রাতারগুল ও জাফলংয়ে হাসির স্রোত

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:২৬ পিএম, ১৩ মে ২০২৫

জাবেদুর রহমান

স্বপ্ন ছিল একদিন সবাই মিলে প্রকৃতির বুকে কিছুটা সময় কাটাবো। সে স্বপ্নই সত্যি হলো ১০ মে এক উজ্জ্বল সকালে। ‘এক মুঠো হাসি’ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত হলো রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট ও জাফলং ভ্রমণ।

ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই আমরা চলে এলাম রাজা কমপ্লেক্সের সামনে। সেখান থেকে গাড়িতে হালকা নাস্তা শেষ করে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিই। সবারই মন ছিল উত্তেজনায় ভরপুর। মনে হচ্ছিল, আমরা যেন স্কুল পালিয়ে অ্যাডভেঞ্চারে বেরিয়েছি।

রাতারগুল ও জাফলংয়ে হাসির স্রোত

সিলেটে পৌঁছে প্রথম গন্তব্য ছিল রাতারগুল, বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন। নৌকায় চেপে ঢুকে পড়লাম সবুজের গহীনে। চারপাশের গাছগুলোর পা ডুবে আছে পানিতে, নীরব অথচ জীবন্ত! আমাদের দল উচ্ছ্বাসে মুখর হয়ে কেউ ছবি তুলছে, কেউবা একাগ্র চোখে প্রকৃতির সৌন্দর্য গিলছে।

নৌকা বেয়ে একসময় আমরা যখন বনভূমির মাঝখানে এসে থামি; তখন প্রকৃতির নিঃশব্দতা যেন মনটাকে নতুন করে সাজিয়ে দেয়। আমরা কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে ছিলাম। হালকা বাতাসের শব্দ আর জলের ঢেউয়ের কলতান। মনে হলো, এ যেন প্রকৃতির কাছে আত্মসমর্পণের এক নিঃশব্দ প্রার্থনা।

রাতারগুল থেকে ফিরে আমরা বিশ্রাম নিই এবং দুপুরের খাবার একসাথে খেয়ে নিই। এরপর যাত্রা শুরু করি জাফলংয়ের পথে। জাফলং পৌঁছে নদীর স্বচ্ছ জল আর পাথরের রাজ্যে হারিয়ে গেলাম আমরা। কেউ নামলো পানিতে, কেউ আবার পাহাড়ের গায়ে বসে ছবি তুললো।

সবচেয়ে আকর্ষণীয় মুহূর্ত ছিল আমাদের এই যাত্রাপথে গান, কবিতা ও কৌতুকের আনন্দে আমরা ছিলাম আত্মহারা। সোহান, সাবরিন, স্নিগ্ধা, রজনী, তানহা, সাজেদার অসাধারণ গান ও অভিনয় সবার মন কেড়েছে। ইংরেজি শব্দ ব্যবহার না করে বাংলায় দুই মিনিটের প্রতিযোগিতায় আমি, মহসিন ও হাসান যথাক্রমে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জন করি।

রাতারগুল ও জাফলংয়ে হাসির স্রোত

অভিনয়ের দিক থেকে পারবেজ হাসান সবার মন জয় করে নিয়েছিলেন, যা ছিল এককথায় চমৎকার। তবে মাহবুব, রায়হানের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং ফাইজা, মকবুল, মাছুম, রোহান ও মোস্তাকিমের মজার মজার কথাবার্তায় আনন্দকে দ্বিগুণ করেছে।

ভ্রমণ শেষে বাসে ফেরার পথে কেউ স্মৃতিচারণে ব্যস্ত আর কেউ কেউ গাইছেন নানা ধরনের গান। এই ভ্রমণ শুধু জায়গা দেখা ছিল না, এ ছিল বন্ধন তৈরির এক অদৃশ্য সেতু। সহযাত্রীদের হাসি, সহযোগিতা আর ভালোবাসায় আমরা হয়ে উঠেছিলাম একটি পরিবার। ‘এক মুঠো হাসি’র নামের মতোই আমরা প্রকৃতির বুক থেকে তুলে এনেছিলাম মুঠোভর্তি হাসি।

লেখক: শিক্ষক, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।