করোনাকালে ভ্রমণ : যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন
করোনাভাইরাস পুরো পৃথিবীকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে। থমকে গেছে জনজীবন। এরই মধ্যে ভাইরাসের ভ্যাকসিন বাজারে চলে এসেছে। অনেক দেশে ইতোমধ্যে ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম শুরু হয়ে গেছে। অনেকেই গত কয়েক মাসের বদ্ধ জীবন থেকে ছুটি নিয়ে ভাবছেন কোথাও থেকে ঘুরে আসবেন। অনেকে আবার অলরেডি পথে নেমে পড়েছেন। সামাজিক মাধ্যম খুললেই চোখে পড়ছে মানুষের বেড়ানোর ছবি।
করোনার ভ্যাকসিন চলে আসলেও এখনো মহামারি কাল একেবারেই শেষ হয়ে যায়নি। এরই মধ্যে নতুন আতঙ্ক এসে দাঁড়িয়েছে ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন। তবে এর ভেতরে আপনি চাইলে সতর্কতার সঙ্গে কোথাও থেকে ঘুরে আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে চলাফেরার জন্য বিশেষজ্ঞরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন, সেগুলো মেনে চললে কিছুটা হলেও ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
করোনার এই সময়ে কোথাও ঘুরতে গেলে আপনাকে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এই প্রতিবেদনে আপনার সামনে তেমন কিছু বিষয় উল্লেখ করা হবে যেগুলো মেনে চললে অনেকটা নিরাপদে আপনি ভ্রমণ করতে পারবেন বলে আশা করি।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
শুধু বাংলাদেশ কিংবা ভারত নয় নয়। সারাবিশ্বে ভ্যাকসিন বাজারে আসার পর মানুষ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি বাদ দিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন রাস্তায়। এটিকে মারাত্মক আশঙ্কাজনক বলছেন করোনা বিশেষজ্ঞরা।
ভ্রমণ চিকিৎসা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সোসাইটির ডিন ডা. লিন চেন। তিনি বলছেন, ‘করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার মানে এই নয় যে, আমরা এখন পুরোপুরি সুরক্ষিত। বরং এই মুহূর্তে আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তা থেকে বলা যায়, আমরা সংক্রমণ ছড়ানোর বা সংক্রমণ বহন করার ক্ষমতা কমিয়ে এনেছি সেটা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। সুতরাং আমাদের এখনো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে হবে।’
কোন কোন বিষয়ে সতর্ক হবেন
উডল্যান্ডস হাসপাতালের ইন্টারন্যাশনাল মেডিসিনের চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল জানাচ্ছেন, এখনো সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি। কারণ ভ্যাকসিন বেরিয়েছে মানেই সব ঠিক হয়ে গেছে, এমন কিন্তু নয়। প্রথমত, টিকা এখনো পুরোদমে দেয়া শুরু হয়নি। আর দেয়া শুরু করলেও এটি সঙ্গে সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করবে, তাও নয়। তাই ভ্যাকসিন বাজারে এসেছে, শুধু এই আশ্বাসে সব স্বাস্থ্যবিধি ভুলে বেরিয়ে পড়া উচিত হবে না।
>> করোনাকালে যদি ঘুরতে বের হতে হয় তাহলে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে বের হতে হবে। যেখানেই যান, মাস্ক ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। এমনকি জনবহুল নয় এমন জায়গাতেও না। কারণ সেক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, আপনি নিজেও কোনো না কোনোভাবে সংক্রমণ ছড়াতে পারেন।
>> কোথাও ঘুরতে গেলে হোটেলে থাকতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে হোটেলের ঘর পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব নিতে হবে নিজেকেই। প্রয়োজনে হোটেলের দেয়া শীতের কাপড়- কম্বল/বালিশ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে। এমনকি হোটেলের দেয়া টাওয়েলও ব্যবহার না করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা।
>> খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রেও যদি বাইরের খাবার খেতে হয় তবে অনটাইম প্লেটে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
>> এছাড়া ঘন ঘন হাত ধুতে হবে বা স্যানিটাইজ করতে হবে। একইসঙ্গে যেখানে থাকবেন সেখানকার বিছানা-বালিশ স্যানিটাইজের ব্যবস্থা করা।
>> বেড়াতে যাওয়ার জন্য এখন বেশি জনবহুল জায়গা না বেছে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গা বাছাই করা ভালো।
>> মনে রাখতে হবে, আপনার সুরক্ষাবিধি বজায় রাখার ওপরেই নির্ভর করছে বাকিদের সুরক্ষা।
>> এছাড়া যেখানে বেড়াতে যাবেন সেখানকার স্থানীয় হাসপাতালের নম্বর, অ্যাম্বুলেন্সের নম্বর সংগ্রহে রাখুন।
>> বেড়াতে গিয়ে তেমন সমস্যাবোধ করলে এড়িয়ে না গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
সূত্র : ভারতীয় গণমাধ্যম
এআরএ