যেভাবে গবাদি পশু কৃমির আক্রমণ থেকে রক্ষা করবেন

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৩০ এএম, ২০ জুলাই ২০২২

মানুষের মতো গবাধি পশুও কৃমিতে আক্রান্ত হয়। দেশের খামারিরা গবাদি পশু পালন করতে গিয়ে কৃমির আক্রমণ নিয়ে সমস্যা পড়েন। তাই জেনে নিতে হবে কৃমি থেকে কিভাবে গবাদি পশুকে রক্ষা করবেন।

কৃমি এক ধরনের পরজীবি। যা পশুর ওপর নির্ভর করে জীবন ধারণ করে। এসব পরজীবি পশুর ফুসফুসে, লিভারে, চোখে, চামড়ায় বাস করে ও পশুর হজমকৃত খাবারে বসে থাকে। অনেক কৃমি পশুর রক্ত চুষে দুর্বল করে ফেলে।

গবাদি পশুর বাসস্থানের জন্য নির্ধারিত স্থানের মাটি শুষ্ক ও আশপাশের জমি থেকে উঁচু হওয়া প্রয়োজন। সম্ভব হলে নদীনালা, খালবিল, হাওর-বাওড় থেকে দূরে করতে হবে। গবাদি পশুর খামারের আশপাশে যেন বৃষ্টির পানি এবং অন্যান্য বর্জ্য জমে না থাকে । খামারের জন্য নির্ধারিত স্থানের মাটিতে বালির ভাগ বেশি হওয়া প্রয়োজন যেন বর্ষাকালে খামারের মেঝে কর্দমাক্ত না হয়।

পশুর মলমূত্র ও আবর্জনা অল্প সময় পরপর পরিষ্কার করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ঘরে মলমূত্র ও আবর্জনা জমা না থাকে। গবাদিপশুর বাসস্থান প্রতিদিন আদর্শ ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে এবং জীবাণুনাশক মেশানো পানি দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। প্রতি চার মাস পর পর কৃমির ওষুধ নিয়মিত খাওয়াতে হবে। সকালে খালি পেটে কৃমির ওষুধ খাওয়ালে সবচেয়ে ভালো হয়। সকালে কৃমির ওষুধ খাওয়ালে বেশি কার্যকর হয়।

গরুকে কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর সময় কিছু নিয়ম জানা খুবই জরুরি। গরুর কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ানোর সময় ট্যাবলেটটি গুঁড়া করে চিটাগুড়ের সঙ্গে মাখিয়ে অথবা কলা পাতাতে করে খাওয়ানো যায়। গরুকে কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ানোর পর কমপক্ষে এক ঘণ্টা কোনো ধরনের খাদ্য দেওয়া যাবে না।

যেভাবে গবাদি পশু কৃমির আক্রমণ থেকে রক্ষা করবেন

কোনোভাবেই দানাদার খাদ্যের সঙ্গে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। গরুকে দানাদার খাদ্যের সঙ্গে মিশালে কীটনাশক ট্যাবলেটে তেমন কোনো কাজ করে না।

গর্ভবতী গাভীর ঔষধ প্রদানের কমপক্ষে ৪৫ দিন পর কীটনাশক ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে। তবে গর্ভবতী গাভীকে খাওয়ালে সমস্যা নেই। কোনোভাবে মাত্রার চেয়ে কম পরিমাণে খাওয়ানো যাবে না। মাত্রার চেয়ে কম খাওয়ালে কৃমি না মরে গিয়ে আরও বেশি আক্রমণ করবে। গর্ভবতী গাভীকে ট্যাবলেট খাওয়ানোর সময় অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।

গরু যখন ঘাস খায় তখন মুখের মাধ্যমে একটা গরু থেকে অন্য গরুতে কৃমি ছড়াতে পারে। গরুর কৃমি রোগের আক্রান্তের লক্ষণ বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। যেমন গরুর খাবারে অরুচি হয়ে দেখা দেয়। পাশাপশি ঘনঘন পেট ফাঁপা দেখা দিবে। শক্ত না হয়ে নরম পায়খানা বের হবে, গরুর শরীরে রক্ত কমে গরু দুর্বল হয়ে পড়বে। গরুর স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে না। লোম বিবর্ণ হয়ে যায়। দুর্গন্ধযুক্ত পাতলা পায়খানা হয়। মাঝে মাঝে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। কোনো কোনো সময় গলার নিচে পানি জমে ফুলে ওঠে রক্তস্বল্পতা দেখা যায়।

কৃমি হলে গবাদি পশুকে অ্যালবেনডাজল বা প্যারাজল অথবা ফেনভিক ঔষধ খাওয়াতে হবে। এছাড়া ইঞ্জেকশন নাইট্রোকসিনিল আইভারমেকটিন সঙ্গে লিভার মিসল। এগুলো গরম পানির সঙ্গে খাওয়ানো যায়। এগুলো ৪ মাস পর পর দিতে হবে।

এমএমএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।