ফেনীতে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
ফেনীর ৬ উপজেলায় রোপা আমনের আবাদ যেমন লক্ষ্যমাত্রার বেশি হয়েছে তেমনি ফলনও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এরই মধ্যে জেলার অর্ধেকের বেশি ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। শেষ হতে আরও সপ্তাহ খানেকের বেশি লাগবে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৬ হাজার ৭৫৫ হেক্টর। ছয় উপজেলায় আবাদ হয়েছে প্রায় ৬৭ হাজার হেক্টর। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী জেলায় উচ্চ ফলনশীল জাতের আবাদ হয়েছে বেশি। লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯০ শতাংশই উচ্চ ফলনশীল জাত আবাদ করেছে কৃষকরা। জেলায় এ জাতের আবাদ হয়েছে ৬৩ হাজার ৭৮৫ হেক্টর, অন্যদিকে স্থানীয় জাতের ২ হাজার ৯২১ হেক্টর আর হাইব্রিড হয়েছে মাত্র ৮৮ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা উফশী জাতের প্রতি হেক্টরে ৪ দশমিক ০৫ মেট্রিক টন থাকলেও এরই মধ্যে কর্তন হওয়া জমিতে আরও বেশি উৎপাদন হয়েছে।

মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সময়মতো বৃষ্টিপাত এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর রোপা আমনের ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের জেলা থেকে মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণও কৃষকদের আমন আবাদে উৎসাহ যুগিয়েছেন এবং বিভিন্নভাবে কারিগরি সহযোগিতা দিয়েছেন।

ইউনিয়নের মমারিজপুর গ্রামের কৃষক মাইন উদ্দিন জানান, তিনি ২ একর জমিতে উফশী জাতের মাটির উর্বরতা বেড়ে দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা আমন আবাদ করেছেন। এবারে বন্যার ফলে যাওয়ায় সারের ব্যবহার কম হয়েছে। ফলে আমনে অন্যবারের তুলনায় ব্যয় কিছুটা কমেছে।
কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৮৩শতাংশ কাটা সম্পন্ন হয়েছে। ২০ নভেম্বর থেকে জেলায় আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে অবশিষ্ট জমির ধান কাটা সম্পন্ন হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আতিক উল্যাহ জানান, এ বছরের আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় জেলায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। একইসঙ্গে বন্যায় পলি জমার কারণে সারের ব্যবহার অর্ধেক কমেছে। এতে করে কৃষকদের যেমন খরচ কমেছে, অন্যদিকে ফলনও ভালো হওয়ায় তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। এছাড়া চলতি মৌসুমে পোকামাকড় দমনে পার্সিং, আলোকফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা উপকৃত হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি জেলায় অনাবাদী জমির পরিমাণ কমিয়ে আনতে। সব ধরনের জমি আবাদের আওতায় আনতে কৃষি বিভাগের কর্মীরা কৃষকদের উৎসাহিত করছেন। অপরদিকে সরকারও কৃষি উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদেরকে নানা ভাবে প্রণোদনা দিচ্ছেন।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/জেএস/