পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে এক এমবিবিএস শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর মন্তব্যে ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, রাত ১২টা ৩০ মিনিটে ওই ছাত্রী বাইরে গেলো কীভাবে? বিরোধী দল বিজেপির পক্ষ থেকে মমতার এই বক্তব্যকে ভিকটিম ব্লেমিং বা ধর্ষণের শিকার তরুণীকেই দায়ী করার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওই ছাত্রী একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ছিলেন। দায়িত্বটা কার? তিনি রাত ১২টা ৩০ মিনিটে বাইরে এলেন কীভাবে?
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকেই তাদের ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে। রাতের সংস্কৃতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ওদের বাইরে যেতে দেওয়া উচিত নয়। জায়গাটা বনাঞ্চল এলাকা, নিজেদেরও সাবধান হতে হবে।
মমতা ব্যানার্জী একই সঙ্গে ওড়িশা সরকারের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন। বলেন, ওড়িশায় সমুদ্রসৈকতে মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়েছে। ওখানে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
তিনি আরও জানান, দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। অন্য রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটলেও আমরা নিন্দা করি। মণিপুর, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ওড়িশায় বহু এমন ঘটনা ঘটেছে। সেখানেও সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
অন্যদিকে, বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে লজ্জাজনক বলে আক্রমণ করেছে।বিজেপি মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া এক্স-এ লিখেছেন, লজ্জাহীন মমতা ব্যানার্জী নারী সমাজের কলঙ্ক। মুখ্যমন্ত্রী হয়েও ভিকটিমকে দোষারোপ করছেন! ন্যায়ের বদলে নির্যাতিতাকে অপমান করছেন।
অন্য মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়াল্লা বলেন, মমতা ব্যানার্জী ভুক্তভোগীকে দোষ দিচ্ছেন আর অভিযুক্তকে রক্ষা করছেন।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, গতকাল যারা নারীর নিরাপত্তা নিয়ে সোচ্চার ছিলেন—প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, রাহুল গান্ধী, সুপ্রিয়া শ্রীনাতে—তারা কি এখন কিছু বলবেন?
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওড়িশার জলেশ্বরের ওই দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী শুক্রবার রাতে এক বন্ধুর সঙ্গে বাইরে বেরিয়েছিলেন। কিছু দুষ্কৃতকারী তাদের আটকায় ও ছাত্রীটিকে জোর করে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে।
ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে বলে জানানো হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি
এমএসএম