নৌকার পালে ভোটের হাওয়া, দুলছে ধানের শীষ


প্রকাশিত: ১১:০৮ এএম, ০৫ মার্চ ২০১৬

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ১৫ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। একই অবস্থা বিএনপিতেও; যদিও আওয়ামী লীগের মতো ১৫ ইউপিতে তাদের তৎপরতা নেই। তবে দুদলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যেই রয়েছে গ্রুপিং।

আগামী ২৩ এপ্রিল তৃতীয় ধাপে এ উপজেলায় অনুষ্ঠিত হবে ইউপি নির্বাচন। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা দলের মনোনয়ন নিয়ে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে লড়বেন।    

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করার পর সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেমে ব্যর্থ হয়ে ঘরে ফেরা বিএনপি বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা অবস্থানে রয়েছে। অবস্থার পরিবর্তনে এ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেও নির্বাচনী হাওয়া লাগলেও দেখা যাচ্ছে তা উপজেলার ৭-৮টি ইউনিয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তার উপর রয়েছে গ্রুপিং। একটি পক্ষ আবার সেখানে সমঝোতার চেষ্টাতেও আছে।

এখনো পর্যন্ত ভোটের মাঠে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থীরা শক্ত অবস্থানে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দক্ষিণ ফটিকছড়ির ৭-৮টি ইউনিয়নে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। উত্তর ফটিকছড়ির নারায়ণহাট ইউনিয়নে ভালো অবস্থানে আছেন জাসদের (ইনু) প্রার্থী। নীররে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

পূর্বে যারা নির্বাচিত হয়েছেন সাধারণ কর্মীরা তাদের আর একই পদে দেখতে চান না বলে মতামত পাওয়া গেছে।

যারা প্রচারণা চালাচ্ছেন
বাগান বাজার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ নেতা রুস্তম আলী, সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন সাজু, বিএনপি নেতা খুরশিদ আলম, একরামুল হক বাবুল, আবুল হোসেন আবু দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রচারণা চালাচ্ছে।

দাঁতমারা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুল হক মজুমদার, মো. জানে আলম, নুরুল আলম, বিএনপি নেতা ইদ্রিস, মো. ইলিয়াছ, শেখ মো. মনির হায়দার, বোরহান উদ্দিন মেম্বার প্রচারণা চালাচ্ছেন।

নারায়ণহাট ইউনিয়নে জাসদ নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবু জাফর মাহমুদ, আওয়ামী লীগ নেতা মো. হারুন, বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম বাবুল, জামায়াতের আবদুস ছাত্তার প্রচারণা চালাচ্ছেন।

ভুজপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ নেতা মো. হারুন, মো. ইব্রাহিম তালুকদার, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ, বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ, নাজিম উদ্দিন বাচ্চু প্রচারণা চালাচ্ছেন।

৫ নং হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ নেতা হাসান সরোয়ার আজম চৌধুরী, জুলফিকার আলী ভুট্টু, বিএনপি নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

পাইন্দং ইউনিয়নে যুবলীগ নেতা মো. শাহ আলম সিকদার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নেতা তসলিম বিন জহুর, বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবু আলম চৌধুরী, নুরুল হুদা চৌধুরী, জামায়াতের নুরুল বশর নবী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

কাঞ্চননগর ইউনিয়নে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান রশিদ উদ্দিন চৌধুরী কাতেব, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এটিএম ইব্রাহিম খান, বিএনপি নেতা বদিউল আলম তালুকদার।

সুন্দরপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ নেতা শাহ নেওয়াজ চৌধুরী, ড. মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, দিদারুল বশর চৌধুরী দুদু, বিএনপি নেতা বর্তমান চেয়ারম্যান শফিউল আজম, সিরাজদৌল্লা চৌধুরী দুলাল।

লেলাং ইউনিয়নে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সরোয়ার উদ্দিন চৌধুরী শাহীন, জিয়াউল হোসেন পারভেজ, বিএনপি নেতা এজাহার মিয়া।

রোসাংগিরী ইউনিয়নে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ নেতা সোয়েব আল ছালেহীন, যুবলীগ নেতা তৌহিদুল আলম, বিএনপি নেতা শাহজাদা ওমর ফারুক,  ইসলামী ফ্রন্ট নেতা শাহাদাত হোসেন আল কাদেরীর তৎপরতা রয়েছে।  

বখতপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ নেতা এম এম সোলাইমান, সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বর্তমান চেয়ারম্যান মো. ফারুক-উল আজম, বিএনপি নেতা নুরুল হুদা, জাহেদ মেম্বার, ইসলামী ফ্রন্ট নেতা জিল্লার রহমান প্রচারণায় রয়েছেন।

জাফতনগর ইউনিয়নে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদৌল্লাহ, মো. নাজিম উদ্দিন নাজু, মো. আব্দুল হালিম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপি নেতা মো. নুরুদ্দিন, ইসলামী ফ্রন্ট নেতা ফয়েজ উদ্দিন।

ধর্মপুর ইউনিয়নে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কাইয়ুম, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রহমান, মো. নজরুল ইসলাম, বিএনপি নেতা মাস্টার মো. ইউছুপ, ইসলামী ফ্রন্ট নেতা শফিউল বশর বাবলু।

সমিতিরহাট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নাসির উদ্দিন চৌধুরী, হারুন রশীদ কালু, বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপি নেতা তৌহিদুল আলম, ইসলামী ফ্রন্ট নেতা মো. নাসির সিকদার, জাতীয় পার্টি নেতা শফিউল আজম চৌধুরী লিটন প্রচারণা চালাচ্ছেন।    

আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান হোসেন আলী তালুকদার, যুবলীগ নেতা অহিদুল আলম, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিম।

ধর্মপুর ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে ইচ্ছুক উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে জামায়াত-শিবির বিরোধী আন্দোলন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন সব স্থানে আমার সরব উপস্থিতি ফটিকছড়িবাসী জানেন। সেই সুবাদে তৃণমূলের ভোট ও দলের নৌকা প্রতীক পেতে কাজ করে যাচ্ছি।

হারুয়ালছড়ি ইউনিয়ন থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাসান সরোয়ার আজম চৌধুরী আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে ইচ্ছুক। তিনি অভিযোগ করেন, কালো টাকার বিনিময়ে তৃণমূলের ভোট ক্রয়ের পায়তারা করছে একটি পক্ষ।

বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা মির্জা আকবর বলেন, এখানে দুটি কমিটি আছে। সেগুলোর ভুল বোঝাবুঝি নিরসনে একটি টিম কাজ করছে। যৌথভাবে কাজ করতে পারলে ধানের শীষের জয় হবে।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট নেতা মো. হোসেন উদ্দিন বলেন, দক্ষিণ ফটিকছড়ির সব ক’টি ইউনিয়নে আমাদের মোমবাতি প্রতীকের প্রার্থী জনগণের কাছে থেকে কাজ করছে। সুষ্ঠু ভোট হলে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীকে আমাদের প্রার্থীরা পরাজিত করতে পারবেন।

ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা খায়রুল বশর জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তৃণমূল ভোটে প্রার্থী হতে ৪১ জন মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। আর আজ থেকে তৃণমুল ভোটের কার্যক্রম শুরু হয়েছে সুন্দরপুর ইউনিয়ন দিয়ে। এ সপ্তাহের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সব ইউনিয়ন শেষ হবে।
 
জীবন মুছা/এনএফ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।