জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

র‌্যাগিংয়ে অভিযুক্ত দুজনকে ‘শিবিরকর্মী’ বলে প্রচার করায় নিন্দা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাবি
প্রকাশিত: ০৮:১৮ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২১ নম্বর ছাত্র হলে (সাবেক শেখ রাসেল হল) র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্তদের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের নাম জড়িয়ে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির জাবি শাখা।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে সংগঠনটির জাবি শাখার সভাপতি মহিবুর রহমান মুহিব ও সেক্রেটারি মুস্তাফিজুর রহমান এক যৌথ বিবৃতিতে এই অভিযোগ করেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, কিছু সংবাদমাধ্যম যাচাই-বাছাই ছাড়াই অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে ছাত্রশিবিরের কর্মী হিসেবে প্রচার করছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

র‍্যাগিংয়ে অভিযুক্ত দুইজনের শিবির সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে শিবির নেতারা বলেন, অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করতে প্রমাণ হিসেবে যে দুটি স্ক্রিনশট ব্যবহার করা হয়েছে, তার একটিতে দেখা যায় গত রমজানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির আয়োজিত উন্মুক্ত ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণের ছবি এবং অন্যটিতে শিবির-সমর্থিত প্যানেলের এক প্রার্থীর পোস্ট শেয়ার করা।

তারা বলেন, ওই ইফতার মাহফিলে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন, যার মধ্যে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া জন্যই কাউকে শিবিরকর্মী হিসেবে চিহ্নিত করা রাজনৈতিক অসততা ছাড়া কিছু নয় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন এবং আরোপিত ‘শিবির-ট্যাগ’-এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এরপরও কোনো প্রমাণ ছাড়াই তাদের নাম ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে- যা সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে এবং সাংবাদিকতার নৈতিকতার পরিপন্থি।

র‌্যাগিংয়ে অভিযুক্ত দুজনকে ‘শিবিরকর্মী’ বলে প্রচার করায় নিন্দা

ছাত্রশিবির নেতারা অভিযোগ করে বলেন, একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলও এ ধরনের অপপ্রচারে জড়িত, যা তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের বহিঃপ্রকাশ। তারা বলেন, যারা নিজস্ব আদর্শ ও কর্মসূচি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে দাঁড়াতে পারে না, তারাই অন্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারে লিপ্ত হয়।

নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, ছাত্রশিবির র‍্যাগিং সংস্কৃতির ঘোরবিরোধী এবং জাকসু নির্বাচনি ইশতাহারেও সংগঠনটি র‍্যাগিং নির্মূলে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল। বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্রশিবিরের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই র‍্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করেছেন।

এছাড়াও জাবি ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও জাকসুর অ্যান্টি-র‍্যাগিং সেলকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।

ছাত্রশিবির নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, একটি জাতীয় টেলিভিশনের একজন সাংবাদিককে শুধুমাত্র সত্য সংবাদ প্রচারের কারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সংবাদমাধ্যমের ওপর এ ধরনের চাপ মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করবে।

বিবৃতিতে সংগঠনটি সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের চাকরি পুনর্বহাল ও গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দুঃখপ্রকাশের আহ্বান জানায়।

মো. রকিব হাসান প্রান্ত/কেএইচকে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।