‘তোমারে পুইত্তা ফালামু’ ছাত্রীকে ইবি শিক্ষিকার হুমকি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ইবি
প্রকাশিত: ০৯:০১ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০২২
শিক্ষিকা মাহবুবা সিদ্দিকা

হলের আবাসিকতার জন্য সাক্ষাৎকারে অংশ নেওয়া কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে বোর্ডে থাকা এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষিকার নাম মাহবুবা সিদ্দিকা। তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি খালেদা জিয়া হলের হাউজ টিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) হলের সিট বরাদ্দের জন্য সাক্ষাৎকার শেষে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।

এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে শনিবার (২৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও তাকে ‌‘শিবির’ বলে আখ্যা দেওয়া হয় আবেদনপত্রে তিনি উল্লেখ করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) খালেদা জিয়া হলের আবাসিকতা প্রাপ্তির জন্য আবেদনকারী ছাত্রীদের সাক্ষাৎকার নেয় হল প্রশাসন। এ সময় বোরকা পরিহিত ওই ছাত্রীকে ‘শিবির’ বলে হেনস্তা করেন শিক্ষিকা মাহবুবা সিদ্দিকা। পরে তিনি তার আত্মীয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে বিষয়টি জানান। তিনি শাখা ছাত্রলীগের কর্মী সাগরকে বিষয়টি জানান। সাগর শিক্ষিকা মাহবুবা সিদ্দিকার সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই ছাত্রীকে হেনস্তা না করার জন্য অনুরোধ করেন।

jagonews24

বুধবার হল প্রভোস্টের কার্যালয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ডাকেন শিক্ষিকা মাহবুবা সিদ্দিকা। পরে তিনি সেখানে গেলে তাকে নানাভাবে হেনস্তা করেন ও হুমকি দেন শিক্ষিকা মাহবুবা। এ সময় হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী, হাউজ টিউটর নাজমুল হুদা ও ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক মেহেদী হাসান উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ, ছাত্রলীগকর্মী সাগরের মাধ্যমে অনুরোধ করার বিষয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষিকা মাহবুবা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমি রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলাম। চিনো তুমি আমারে? আমি কত পাওয়ার চালাইছিলাম তুমি জানো? তোমার এলাকার মেয়র টিটু ভাইকে চিনো? ওইখানে তোমারে পুইত্তা (পুঁতে) ফালামু। আমার বাড়ি কোথায় জানোস? আমার শ্বশুরবাড়ি কোথায় জানস? আমার সাথে ফাইজলামি না? এলাকায়ও টিকতে পারবা না।’

শিক্ষার্থীকে হুমকির বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক মাহবুবা সিদ্দিকা বলেন, ‘বিষয়টি আংশিক সত্য, আংশিক মিথ্যা। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীকে হুমকি দিতে পারে না, শাসন করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘ওই ছাত্রীকে পরেরবার ডাকা হয়েছে। কারণ সে বাইরে গিয়ে আরেকটা ছাত্রলীগের ছেলের কাছে গিয়ে (বিষয়টি) বলেছে। আর সে আমার ছাত্রের মারফত আমাকে থ্রেট করেছে।’

হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী বলেন, ‘হলের ৯৯ শতাংশ ছাত্রী বোরকা পরে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো বাধা নেই। একজন ছাত্রী ভুল করলে যেভাবে বোঝানো হয় সেভাবেই (তাকে) বোঝানো হয়েছে বলে জানি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, ‘আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আগামীকাল বিষয়টি নিয়ে বসবো। তবে ওই শিক্ষিকা যে ভাষা ব্যবহার করেছেন বলে জেনেছি, সেটি সমীচীন মনে হয়নি।’

রুমি নোমান/এসআর

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।