ফেসবুক ভিডিওতে মাসে লাখ টাকা আয় তেজগাঁও কলেজের ছাত্র রাজীবের

ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল কূটনৈতিক হয়ে বিদেশ যাবেন। ফলে উচ্চমাধ্যমিক শেষে চলে এলেন ঢাকায়। রাজধানীর তেজগাঁও কলেজে স্নাতকে ভর্তি হন। পাশাপাশি করতেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি।
হঠাৎ মনে হলো অনলাইনে কিছু একটা করার। ইউটিউবে ভিডিও দেখে খুলে ফেলেন ফেসবুক পেজ আর ইউটিউব চ্যানেল।
সময়টা তখন ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি। পড়ালেখা আর কাজের ফাঁকে টুকটাক ভিডিও বানিয়ে ফেসবুক ও ইউটিউবে দিতেন। ফ্যান, ফলোয়ার তখন তেমন নেই বললেই চলে।
২০২১ সালের জুন মাসে হঠাৎ একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। পরে এক সপ্তাহেই ভাইরাল হয় আরও পাঁচটি ভিডিও। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। হুহু করে বাড়তে থাকে ফেসবুক ফলোয়ারের সংখ্যা। ভিডিও আপলোড করলেই তা চলে যায় মিলিয়ন মিলিয়ন ফেসবুক ব্যবহারকারীর কাছে।
বলছিলাম রাজীব হাসান শিবলীর কথা। তেজগাঁও কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র তিনি। নিজের নামেই খুলেছিলেন ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল। এখন তাকে অনুসরণ করেন এক মিলিয়নেরও বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী।
রাজীব হাসান শিবলীর জন্ম যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নবগ্রামে। ছোটবেলায় নানাবাড়ির স্থানীয় সাড়াতলা হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে ভর্তি হন যশোর বিএএফ শাহীন কলেজে। সেখান থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন।
ফেসবুকে আপলোড করা ভিডিওতে মানুষের বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা, জীবনের চরম সত্য উপলব্ধি, মানুষের স্বাভাবিক দর্শনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
শুরুতে ফেসবুক থেকে অর্থ আয়ের বিষয়টি জানা না থাকলেও পরবর্তীতে জানতে পারেন। এরপর অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে পথচলা শুরু। প্রতি মাসে ফেসবুকে আপলোড করা ভিডিও থেকে রাজীবের আয় প্রায় দেড় লাখ টাকা। প্রথমে পরিবার ও বন্ধুদের সহযোগিতা না পেলেও এখন বেশ উৎসাহ পান। কূটনৈতিক হওয়া স্বপ্ন থাকলেও সেদিকে আর যাওয়া হয়নি রাজীব হাসান শিবলীর।
রাজীব জাগো নিউজকে বলেন, শুরুর পথটা অনেক কষ্টের ছিল। পরিবার, বন্ধু কারো সাপোর্ট পাইনি। ভিডিও দেখে সবাই শুধু হাসাহাসি করতো। যখন দেখলো ফেসবুক ব্যবহারকারীরা আমাকে ভালোভাবে নিচ্ছে, আমার ফলোয়ার হচ্ছে, তখন সবাই উৎসাহ দেয়। এখন আর সমালোচনাকারীরা হাসাহাসি করেন না।
প্রতিদিন নিয়ম করে একটি ভিডিও নিজের পেজে আপলোড করার চেষ্টা করেন রাজীব হাসান শিবলী। তবে ব্যস্ততার কারণে অনেক সময় তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। পড়ালেখা শেষে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে চাকরিতে একেবারেই না তার। জানালেন ব্যবসায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন।
রাজীব বলেন, চাকরিতে এখন আর উৎসাহ নেই। অনলাইনকেই প্লাটফর্ম হিসেবে বেঁছে নিয়েছি। ইচ্ছা আছে ব্যবসার দিকে মনোযোগ দেবো। আর পরিবার যেহেতু আমাকে সাপোর্ট দেয় তাই চিন্তা নেই।
সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে রাজীব বলেন, সমালোচনা অনেক সময় মানুষের প্রতিভা নষ্ট করে দেয়। কেউ কোনো কাজ করতে চাইলে তাকে উৎসাহ দিতে হয়। এতে সে আরও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা পায়।
জেডএইচ/জেআইএম