ভাঙা পা নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধে মানসুরা
রিকশা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন গত ৫ মে। চিকিৎসক রিপোর্টে জানান, তার পা ভেঙে গেছে। তবে এতেও হার মানেননি মানসুরা। স্বপ্ন পূরণের জন্য ভাঙা পা নিয়ে কোনোরকমে অন্যের কাঁধে ভর করে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি।
গুচ্ছভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কেন্দ্রে শনিবার (২৭ মে) দেখা যায়, ভাঙা পা নিয়ে চেয়ারে বসতে না পারলেও মেঝেতে বসেই ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি।
শারীরিক অসুস্থতাকে পেছনে ফেলে গুচ্ছভুক্ত দেশের ২২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন মানসুরা। এর আগে তিনি এভাবেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে চলে ১টা পর্যন্ত। ব্যবসায় অনুষদ ভবন কেন্দ্রের নিচতলার ১০৫ নম্বর কক্ষে ওই ভর্তিচ্ছুর বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন মানসুরা। তার স্বপ্ন ম্যানেজমেন্ট বিভাগে পড়াশোনা করার। তাই শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও স্বপ্ন পূরণে লড়াই করছেন তিনি।
পরীক্ষা শেষে মানসুরা বলেন, পরীক্ষা ভালো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকরা অনেক সাহায্য করেছেন। যদি চান্স হয় তাহলে ইবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগে পড়াশোনা করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গে আমার মা-বাবাও এসেছেন। তারা আমার জন্য সবসময় লড়াই করে যাচ্ছেন। আমার পাশে তারা আছেন বলেই ভরসা পাচ্ছি। মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। তাদের এই কষ্ট সার্থক হবে যদি আমি আমি এই ভর্তিযুদ্ধে সফল হতে পারি।
এ বিষয়ে মানসুরার বাবা মোখলেছুর রহমান বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কাছ থেকে যথেষ্ট আন্তরিকতা পেয়েছি। তারা আমার মেয়ের পরীক্ষার জন্য সব রকম সাহায্য করেছেন। আমার মেয়ে যেহেতু ভাঙা পা নিয়ে সিটে বসে পরীক্ষা দিতে পারবে না, তাই তার জন্য শিক্ষকরা বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, মেয়েটি যেহেতু ভাঙা পা নিয়ে চেয়ারে বসতে পারে না, তাই তার সুবিধার্থে নিচে বসে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। উপাচার্য স্যারকে বিষয়টি জানানোর পর তিনি তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।
রুমি নোমান/এমআরআর/এমএস