পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
পদোন্নতির লোভ দেখিয়ে সহকর্মীকে ডেপুটি রেজিস্ট্রারের কুপ্রস্তাব
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান টমাসের একটি আপত্তিকর ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। যেখানে তাকে এক নারী সহকর্মীকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নামে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দিতে শোনা যায়।
ডেপুটি রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান টমাস বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্থাপন শাখায় কর্মরত আছেন। আর ওই নারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে কর্মরত আছেন।
ওই ফোনালাপের ১৪ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের একটি অডিও জাগো নিউজের হাতে এসেছে। অডিও রেকর্ডের কথোপকথনে মিজানুর রহমান এক নারী সহকর্মীকে সেকশন অফিসার এবং পরবর্তীতে আরও উচ্চ পদে পদোন্নতিসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দিতে পটুয়াখালীর একটি বাসায় নিয়ে একান্তে সময় কাটানোর প্রস্তাব দেন। তবে ওই নারী তার অনৈতিক প্রস্তাব নাকচ করে দেন। পরে রাজি করাতে না পেরে ওই কর্মকর্তাকে নিজের ক্ষমতার কথা বলে চাপ প্রয়োগ করতে শোনা যায়।
মিজানুর রহমান টমাসকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাডার লাইনে রাজনীতি করেছি, একমাত্র আমার সাথে নাইন এমএম (পিস্তল) থাকতো। এছাড়া পবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের দুইবার সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলাম, আগামীতে সভাপতি পদে নির্বাচন করবো।’

এসময় তিনি তদবির করে অন্য কর্মকর্তা বদলির উদাহরণ দেন। এরপরও ওই নারী অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার প্রতি রাগ করেছেন এবং কষ্ট পেয়েছেন বলে জানান।
অন্যদিকে, ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্তত কয়েকজন ডেপুটি-রেজিস্ট্রার জানান, একজন জুনিয়র নারী সহকর্মীর প্রতি সিনিয়র কর্মকর্তার এমন দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ঘটনার পর থেকে নারী সহকর্মীরা আতঙ্কে আছেন। অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।
ফোনালাপে অনৈতিক প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান টমাস জাগো নিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটা অপশক্তি এটা সম্প্রচার করেছে। এটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। যারা এই অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁস ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, লোকমুখে শুনে এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে, নারী সহকর্মীর সঙ্গে একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রারের এমন ব্যবহারের ঘটনা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্নে জন্ম দিয়েছে।
আব্দুস সালাম আরিফ/এমআরআর/জিকেএস