ভাতা পেলেও ইউনিফর্ম পরেন না রাবির অধিকাংশ কর্মচারী

মনির হোসেন মাহিন মনির হোসেন মাহিন , বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, রাবি
প্রকাশিত: ১১:৩১ এএম, ০৩ মার্চ ২০২৪
ফাইল ছবি

স্বল্প বেতন, নিজেদের অনাগ্রহ এবং প্রশাসনিক তদারকির অভাবে বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরেন না রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধিকাংশ কর্মচারী। পোশাকের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে ৬৫০০ টাকা ভাতা পান তারা। তবে স্বল্প বেতন হওয়ায় পোশাকের সেই অতিরিক্ত টাকা সাংসারিক কাজে লাগান কর্মচারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, ট্যাকনিকেল পদের কর্মচারী এবং চতুর্থ শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে পদোন্নতি পাওয়া কর্মচারীরা এই ভাতা পান। কিন্তু সরাসরি তৃতীয় শ্রেণিতে নিয়োগ হলে এই ভাতা প্রযোজ্য নয়।

উপ-রেজিস্ট্রার (প্র.) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছ থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর মোট পদ আছে ১৯০৯টি। নিয়োগ না থাকায় ৭৫২টি পদ শূন্য আছে। গত ৩০ জুন পর্যন্ত এই দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী মোট কর্মচারী আছেন ১১৫৭ জন৷ চতুর্থ শ্রেণিতে কর্মরত এ সকল কর্মচারী, চতুর্থ শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে পদোন্নতি পাওয়া ২৫০-৩০০ জন কর্মচারী এবং ট্যাকনিকেল পদের কর্মচারীরা ২ সেট পোশাকের জন্য বাৎসরিক ৩০০০ টাকা এবং ৩ বছরে ১ বার শীতকালীন পোশাকের জন্য ৩৫০০ টাকা পেয়ে থাকেন। তবে সরাসরি তৃতীয় শ্রেণিতে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীরা এই ভাতা পান না।

ইউনিফর্ম না পরার কারণ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা জাগো নিউজকে জানান, তারা যে বেতন পান তা খুবই স্বল্প। সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয়। তাই এই টাকা তারা ইউনিফর্ম বানানোর কাজে ব্যবহার না করে সাংসারিক কাজে ব্যবহার করেন।

তারা আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো চাপ নেই। তাই তারা ইউনিফর্ম পরেন না এবং ইউনিফর্মের বিষয়ে তাদের নিজেদের কোনো আগ্রহও নেই।

চতুর্থ শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে পদোন্নতি পাওয়া একাধিক কর্মচারী দাবি করেন, পোশাক ভাতা পেলেও তাদের এই পোশাক পরতে হয় না। শুধু চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্যই এই ইউনিফর্মের বাধ্যবাধকতা আছে।

এ বিষয়ে উপ-রেজিস্ট্রার (প্র.) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তাদের এমন দাবি সঠিক নয়। যেহেতু সরকার তাদের পোশাকের জন্য ভাতা দেয়, তাই তাদের এই পোশাক পরতে হবে। বাধ্যবাধকতা আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সংগঠন সাধারণ কর্মচারী সমিতি ট্রেট ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আজিজ বলেন, প্রায় সকল কর্মচারী ইউনিফর্ম পরেন। শীতের কারণে ভেতরে পরে থাকেন, কিন্তু বোঝা যায় না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, পোশাকের জন্য তাদের যে অর্থ দেওয়া হয় তা সেই কাজেই ব্যয় করা উচিত। বহুদিন ধরেই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ইউনিফর্মের বিষয়টিতে শিথিলতা আছে। সংশ্লিষ্ট আরও কিছু কারণে এই বিধি ভঙ্গ হয়ে আসছে। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেছি।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু সরকার এই সংক্রান্ত ভাতা দেয়, তাই এটা পরা উচিত। আমরা ইচ্ছে করলেই একদিনে তাদের ইউনিফর্ম পরাতে সফল হবো না। কিন্তু আমরা তাদের বুঝাতে চেষ্টা করেছি যে পোশাকগুলো অবশ্যই পরতে হবে। বছরে ২ সেট পোশাকের জায়গায় অন্তত এক সেট বানাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই। বিশ্ববিদ্যালয়কে সুন্দর করতে গেলে সুনির্দিষ্ট ড্রেস পরে নিজের কাজ করা উচিত।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।