যমুনা রেলসেতু

গন্তব্যে পৌঁছাতে ট্রেনযাত্রায় সময় লাগছে কম

শেখ মহসীন
শেখ মহসীন শেখ মহসীন ঈশ্বরদী (পাবনা)
প্রকাশিত: ০৯:২৫ পিএম, ১০ মার্চ ২০২৫

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে নবনির্মিত রেলসেতুর ওপর দিয়ে যাত্রীবাহী ১৬ জোড়া ট্রেন চলাচল করছে। এরমধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন রয়েছে ১৫ জোড়া। বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেন চলাচলের নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, যমুনা রেলসেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকারী প্রায় প্রতিটি ট্রেনের ৫-৩০ মিনিট পর্যন্ত যাত্রার সময় কমেছে। তবে কিছু ট্রেনের সময় অপরিবর্তিত রয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে যমুনা রেলসেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। 

কোন ট্রেন কখন পৌঁছাচ্ছে

ট্রেনযাত্রায় সবচেয়ে সময় কমেছে একতা এক্সপ্রেস (৭০৬ ডাউন) ট্রেনের। এ ট্রেন পঞ্চগড় স্টেশন থেকে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ছেড়ে ঢাকা কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছাচ্ছে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে। এ ট্রেন আগে ৭টা ৫০ মিনিটে ঢাকা পৌঁছাতো। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী এ ট্রেন ৩০ মিনিট কম সময়ে গন্তব্য পৌঁছাবে।

ঢাকা থেকে খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস (৭৬৪ ডাউন) ট্রেন ২০ মিনিট কম সময়ে খুলনা পৌঁছে যাচ্ছে। এ ট্রেন সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে খুলনা পৌঁছে যাবে। এটি আগে খুলনা পৌঁছাতো ভোর ৫টায়। খুলনা-ঢাকাগামী চিত্রা (আপ-৭৬৩) সময়ের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটি আগের সময়ে খুলনা থেকে সকাল ৯টায় ছেড়ে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকা পৌঁছাচ্ছে।

ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন থেকে ঢাকাগামী ঢাকা কমিউটার (৯৯) ভোর ৫টায় ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছায় বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে। এ ট্রেনের সময় পরিবর্তন হয়নি। আবার ঢাকা থেকে নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে পৌঁছাচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বনলতা এক্সপ্রেস (আপ-৭৯১) ভোর ৬টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছায় ১১টা ৩৫ মিনিটে। এ ট্রেনের সময়সূচি অপরিবর্তিত রয়েছে। বনলতা এক্সপ্রেস ডাউন (৭৯২) ঢাকা থেকে ১টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌঁছাচ্ছে। আগে এটি ৭টা ৩০ মিনিটে পৌঁছাতো। যমুনা রেলসেতুতে চলাচলের ফলে ১৫ মিনিট আগেই এ ট্রেন গন্তব্য পৌঁছে যাচ্ছে।

রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সিল্কসিটি (৭৫৪ ডাউন) রাজশাহী থেকে সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে ঢাকা পৌঁছে যাচ্ছে। এটি নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১০ মিনিট আগে পৌঁছাচ্ছে। সিল্কসিটি (আপ ৭৫৩) ঢাকা থেকে ২টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে রাজশাহীতে পৌঁছাচ্ছে ৮টা ২০ মিনিটে। অর্থাৎ ১০ মিনিট আগে পৌঁছাচ্ছে গন্তব্যে। ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস (আপ-৭৬৯) ট্রেনের সময় অপরিবর্তিত রয়েছে। এ ট্রেন ভোর ৬টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে ১১টা ৪০ মিনিটে রাজশাহীতে পৌঁছায়।

আরও পড়ুন

রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস (৭৭০-ডাউন) রাত ১১টা ২০ মিনিটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে ঢাকা পৌঁছাবে। এটি এখন আগের নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২০ মিনিট আগে ঢাকা পৌঁছে যাবে।

রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস (ডাউন ৭৬০) রাজশাহী থেকে বিকেল ৪টায় ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছাবে ৯টা ১৫ মিনিটে। এ ট্রেনের সময়সূচি অপরিবর্তিত রয়েছে। ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী পদ্মা এক্সপ্রেস (আপ ৭৫৯) ঢাকা থেকে রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে রাজশাহীতে পৌঁছাচ্ছে ভোর ৪টায়। এ ট্রেন আগে ৪টা ২৫ মিনিটে পৌঁছাতো।

লালমনি এক্সপ্রেস (৭৫১ আপ) ঢাকা থেকে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে লালমনিরহাট পৌঁছায়। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, এ ট্রেন ১০ মিনিট আগে পৌঁছাবে। লালমনি এক্সপ্রেস (ডাউন ৭৫২) লালমনিরহাট থেকে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে ঢাকা পৌঁছে যাচ্ছে ৭টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ এটি আগের সময়ের চেয়ে পাঁচ মিনিট আগে পৌঁছে যাচ্ছে।

ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে চলাচলকারী একতা এক্সপ্রেস (আপ-৭০৫) ঢাকা থেকে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে পঞ্চগড় পৌঁছাবে রাত ৯টায়। এ ট্রেন আগের সময়সূচিতে চলাচল করছে। একতা এক্সপ্রেস (ডাউন-৭০৬) পঞ্চগড় থেকে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ছেড়ে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকা পৌঁছে যাচ্ছে। এ ট্রেন আগের সময়ের চেয়ে ৩০ মিনিট আগে গন্তব্য পৌঁছে যাচ্ছে।

রংপুর এক্সপ্রেস (৭৭১ আপ) ঢাকা থেকে সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ছেড়ে রংপুর পৌঁছে সন্ধ্যা ৭টায়। এটি এখন ১০ মিনিট আগে গন্তব্য পৌঁছে যাচ্ছে। রংপুর এক্সপ্রেস (৭৭২-ডাউন) রংপুর থেকে রাত ৮টায় ছেড়ে ভোর ৬টায় ঢাকা পৌঁছায়। এখন আগের তুলনায় পাঁচ মিনিট আগে এ ট্রেন ঢাকা পৌঁছে যাচ্ছে। চিলাহাটি এক্সপ্রেস (আপ-৮০৫) বিকেল ৫টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে চিলাহাটি পৌঁছে যাচ্ছে রাত ২টা ৪৫ মিনিটে। এ ট্রেন আগে রাত ৩টায় পৌঁছাতো। রেলসেতুর ফলে ১৫ মিনিট আগেই গন্তব্য পৌঁছে যাচ্ছে ট্রেনটি।

রেলসেতু হয়ে চিলাহাটি এক্সপ্রেস (ডাউন-৮০৬) চিলাহাটি থেকে ভোর ৬টায় ছেড়ে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা পৌঁছে যাচ্ছে। এটি পাঁচ মিনিট আগে পৌঁছে যাচ্ছে। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস (আপ ৭৭৯) রাত ৮টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে ভোর ৫টা ১০ মিনিটে কুড়িগ্রাম পৌঁছে। আগের সময়ের চেয়ে ৩০ মিনিট আগে এখন এ ট্রেন কুড়িগ্রাম পৌঁছে যাচ্ছে। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস (ডাউন ৭৯৮) কুড়িগ্রাম থেকে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে ছেড়ে ঢাকা পৌঁছে ৫টা ১৫ মিনিটে। এটি বর্তমানে আগের চেয়ে ১০ মিনিট আগে গন্তব্য পৌঁছে যাচ্ছে।

বুড়িমারী এক্সপ্রেস (৮০৯ আপ) রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে রাত ৮টা ২০ মিনিটে বুড়িমারী পৌঁছাবে। এটি আগে রাত ৮টা ৩০ মিনিটে পৌঁছাতো। বুড়িমারী এক্সপ্রেস (ডাউন-৮১০) বুড়িমারী থেকে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ছেড়ে ঢাকা পৌঁছে সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে। এ ট্রেন নির্ধারিত সময়ে চলাচল করছে। দ্রুতযান এক্সপ্রেস (আপ-৭৫৭) ঢাকা থেকে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে পঞ্চগড় পৌঁছে যাচ্ছে। এ ট্রেন আগের সময়সূচির চেয়ে ২৫ মিনিট কম সময়ে চলাচল করছে।

দ্রুতযান এক্সপ্রেস (ডাউন ৭৬৬) চিলাহাটি থেকে রাত ৮টায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছে ভোর ৫টা ২৫ মিনিটে। এখন পাঁচ মিনিট আগেই এটি ঢাকা পৌঁছে যায়। নীলসাগর এক্সপ্রেস (আপ ৭৬৫) ঢাকা থেকে ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে চিলাহাটি পৌঁছায় বিকেল ৪টায়। নীলসাগর এক্সপ্রেস (ডাউন ৭৬৬) চিলাহাটি থেকে ৮টায় ছেড়ে বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে ঢাকা পৌঁছে। এ ট্রেন আগের সময়সূচির চেয়ে পাঁচ মিনিট আগে গন্তব্য পৌঁছে যাচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন (৭৭৫ আপ) ভোর ৬টায় সিরাজগঞ্জ থেকে ছেড়ে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে ঢাকা পৌঁছায়। আর সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ডাউন (৭৭৬) ঢাকা থেকে ৪টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে সিরাজগঞ্জ পৌঁছায় ৮টা ৪০ মিনিটে। বর্তমানে এ ট্রেন আগের সময়সূচির চেয়ে ১০ মিনিট আগে গন্তব্য পৌঁছাচ্ছে।

ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশন মাস্টার সুজন কুমার জাগো নিউজকে জানান, রেলওয়ের নতুন সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ঈশ্বরদী স্টেশন হয়ে চলাচলকারী ১৮ জোড়া ট্রেন নির্ধারিত সময়ে চলাচল করছে। দু-একটা ট্রেন কিছুটা বিলম্বে চলছে। বিশেষ করে যমুনা রেলসেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকারী ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ে চলাচল করছে। সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় বেশ কিছু ট্রেন চলাচল করছে না।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন জাগো নিউজকে জানান, যমুনা রেলসেতু হয়ে ট্রেন চলাচলের ফলে প্রায় সব ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। এ সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের ফলে সময় লাগছে। আগামী ১৮ মার্চ এ সেতুর দুটি লাইন (বর্তমানে এক প্রান্ত দিয়ে চলাচল করছে) খুলে দেওয়া হবে। তখন বর্তমান সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচল করবে। এতে কোনো ট্রেন বিলম্ব হবে না।

তিনি আরও বলেন, যমুনা সেতু দিয়ে ধীরগতিতে ট্রেন চলাচলের ফলে সেতুর দুই পাশে একাধিক ট্রেনকে অপেক্ষা করতে হতো। এখন থেকে কোনো ট্রেনকে আর অপেক্ষায় থাকতে হবে না। যমুনা রেলসেতু চালু হওয়ার ফলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণ অঞ্চলের ট্রেন চলাচলের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। 

এসআর

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।