দেশ পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে হেলাল সাধুর একতারা-দোতারা

এন কে বি নয়ন এন কে বি নয়ন ফরিদপুর
প্রকাশিত: ০৯:৩১ এএম, ২০ এপ্রিল ২০২৫

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে তৈরি একতারা-দোতারা যাচ্ছে কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজারসহ সারাদেশে। এমনকি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও যাচ্ছে এসব বাদ্যযন্ত্র। হেলাল সাধু নামে এক ব্যক্তি তার নিজের কারখানায় তৈরি করছেন এসব বাদ্যযন্ত্র। একতারা-দোতারার পাশাপাশি সরোস, সরোদ ও খুনজুরি তৈরি করেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হেলাল সাধু উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের ডহরনগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গত প্রায় সাত বছর ধরে রুপাপাত ইউনিয়নের কালিবাড়ি এলাকায় অবস্থিত তার কারখানায় এসব বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে আসছেন। কুষ্টিয়া, রাজবাড়ি, ফরিদপুর, মাগুরা, গোপালগঞ্জ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় পাইকারিভাবে বিক্রি হচ্ছে এসব যন্ত্র। দেশ পেরিয়ে এসব যন্ত্র যাচ্ছে ভারতে।

দেশ পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে হেলাল সাধুর একতারা-দোতারা

সরেজমিনে দেখা যায়, চারজন শ্রমিক দিনরাত এসব যন্ত্র তৈরিতে কাজ করেন। প্রকারভেদে একতারা ৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতিটি দোতারা, সরোস, সরোদ ৪ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

হেলাল সাধু জাগো নিউজকে বলেন, গত প্রায় ৭ বছর ধরে এসব যন্ত্র তৈরি করছি। স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়। আশপাশের ছোট-বড় মেলায় আমার তৈরি এসব যন্ত্র বিক্রি হয়। ভারতেও পাঠানো হয় এসব বাদ্যযন্ত্র। আমার এ কারখানায় নিয়মিত চারজন শ্রমিক কাজ করেন। তাদের প্রত্যেককে প্রতিদিন ৭০০ শত টাকা করে মজুরি দিতে হয়। কারখানা থেকে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা আয় হয়।

দেশ পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে হেলাল সাধুর একতারা-দোতারা

বোয়ালমারী শিল্পকলা অ্যাকাডেমির সদস্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব খান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন জাগো নিউজকে বলেন, এক সময় গ্রামাঞ্চলের মানুষ লোকসংগীত, ভাটিয়ালি, পল্লীগীতি, ভাওয়াইয়া, লালনগীতি গান গাইতো। এসব গানের মূল বাদ্যযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার হতো একতারা-দোতারা। বাড়ির উঠানে রাতে লোকজন জড়ো হয়ে একতারা-দোতারা বাজিয়ে এসব গান গাইতো। এখন তা যেন বিলুপ্তির পথে। যে কারণে একতারা-দোতারার কদর বেশ কমেছে।

দেশ পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে হেলাল সাধুর একতারা-দোতারা

এ বিষয়ে রূপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান সোনা মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, হেলাল সাধু একতারা-দোতারা, সরোস, সরোদ তৈরি করে একদিকে জীবিকা নির্বাহ করছেন, অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি এলাকার সুনাম ছড়াচ্ছেন। তার এ কারখানা চালানোর জন্য আমাদের উৎসাহ দেওয়া উচিত। তার জন্য সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।

এমএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।