নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের কার্যালয় এখন বাকরখানির দোকান

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৬:২৩ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২৫

দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়টি এখন বাকরখানির দোকানে পরিণত হয়েছে।

এতদিন ধরে এটি ভাসমান মানুষ ও পথশিশুদের আশ্রয়ঘর হিসেবে থাকলেও এবার সেখানে বাকরখানির দোকান দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে এই দোকানে বাকরখানি বানানো ও বিক্রি করতে দেখা যায়।

দোকানের মালিক মো. সুমন মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অফিসটি ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর ছিল। সেই সঙ্গে দিন-রাত নেশাখোরদের আড্ডা ছিল। তাই অফিসের সামনের জায়গাটি পরিষ্কার করে এই দোকান দেওয়া হয়েছে। জাসাসের এক নেতা দোকান বসিয়ে দিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের কার্যালয় এখন বাকরখানির দোকান

তবে এই নেতার নাম প্রকাশ করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন সুমন মিয়া।

এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আর এই পতনের সঙ্গে সঙ্গে আত্মগোপনে চলে যান নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আবার কেউ কেউ বিদেশে পাড়ি জমান।

এ অবস্থায় একসময় নেতাকর্মীদের দ্বারা জমজমাট থাকা শহরের দুই নম্বর রেলগেট এলাকার আওয়ামী লীগ কার্যালয়টি জনমানবহীন ভূতুরে ভবনে পরিণত হয়।

সেখানে বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জেলা ও মহানগর কার্যালয়টি পাগল-মাস্তান এবং ভবঘুরেরা বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। অভ্যুত্থান চলাকালে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল এটি।

নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের কার্যালয় এখন বাকরখানির দোকান

আওয়ামী লীগের ওই কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা মো. সবুজ বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর পুরো অফিস তছনছ হয়ে যায়। এর আগেও ভাঙচুর হয়েছে। ভেতরের যা ছিল সবই চুরি করে নিয়ে গেছে। এরপর শহরের ভাসমান মানুষ দিন-রাত অফিসের সামনে ঘুমিয়ে থাকে। আগে অফিসের ভেতরে ঘুমাতো। একসময় অবৈধ কাজকর্মও হতো। পরবর্তীতে কয়েকজন লোক টিন দিয়ে আটকিয়ে দেওয়ায় তারা বাইরে ঘুমায়। এবার একটি বাকরখানির দোকান দেওয়া হয়েছে সেখানে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার অর্থায়নে দোতলা বিশিষ্ট এ কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছিল।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী সরকার ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। ফ্যাসিবাদী সরকার ব্যবস্থার সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। বর্তমানে দলটি জনগণের মাধ্যমে বিতাড়িত হয়ে একটি ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। কাজেই তাদের কার্যালয় ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হবে এটাই স্বাভাবিক।

মোবাশ্বির শ্রাবণ/জেডএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।