রাকিবের দোকানে মেলে মাল্টা-তেঁতুল-খেজুর গুড়ের চা, স্বাদেও অসাধারণ
চাঁদপুর শহরের স্টেডিয়াম রোড মোড়ে রয়েছে একটি ছোট্ট টং দোকান। পরিচিতি পেয়েছে ‘রাকিবের চায়ের দোকান’ হিসেবে। দেখতে সাধারণ হলেও এই দোকানের চায়ের স্বাদ অসাধারণ। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই, দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ ছুটে আসে বিশেষ এই চায়ের স্বাদ নিতে। চায়ে চুমুক দিতে দিতে খোশগল্প আর হালকা হাওয়ায় শরীর জুড়িয়ে নেওয়া—এসব মিলিয়ে রাকিবের দোকান যেন চাঁদপুর শহরের চাপ্রেমীদের প্রাণ।
রাকিবের দোকানে পাওয়া যায় নানান ধরনের চা, যেমন-দুধ চা, গ্রিন টি, কফি, পাতি চা, আদা চা, লেবু চা, মাল্টা চা, তেঁতুল চা, খেজুরের গুড়ের চা, টু লেয়ারের চা, জলপাই চাসহ কখনো কখনো বিশেষ মসলার চা। প্রতিটি চায়ের পেছনে আছে এক ধরনের যত্ন আর স্বাদে রয়েছে ঘরোয়া ছোঁয়া, যা অন্য কোথাও পাওয়া ভার।
বিকেল হতেই শুরু হয় জমজমাট চায়ের আড্ডা। দোকানের সামনে জড়ো হন নানা পেশার মানুষ। কেউ অফিস শেষে বিশ্রামে, কেউ বন্ধুবান্ধব নিয়ে আড্ডায়। এই দোকানটি প্রমাণ করে, ভালোবাসা আর স্বাদের সংমিশ্রণ হলে ছোট একটি টং দোকানও হয়ে উঠতে পারে মানুষের আড্ডার কেন্দ্রবিন্দু।

রাকিব জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার দোকানের নির্দিষ্ট কোনো নাম নেই। আমার নামেই দোকান পরিচিত। ২০০৪ সাল থেকে বাবার সঙ্গে দোকানে সময় দিতে শুরু করি। এরপর থেকে আমি নিজেই দোকান পরিচালনা করি। আমার চায়ের একটা আলাদা কাস্টমার আছে। প্রতিদিন না এলে তাদের চলে না। সবাই বলে আমার চা অন্য দোকান থেকে আলাদা, তাই সবাই আসে।’
চায়ের কাপে হাত নাড়াতে নাড়াতে রাকিব বলতে থাকেন, সারাদিনে বিকেলের পর থেকে রাত পর্যন্ত ৩-৪ ঘণ্টা চা বিক্রি করেন। এসময়ের মধ্যে ৩০০ কাপের মতো চা বিক্রি হয়। সবচেয়ে বেশি চলে মাল্টা চা। এককাপ মাল্টা চায়ের দাম ১৫ টাকা। এছাড়া লেবু চা ১০ টাকা, গ্রিন টি ১০ টাকা, খেজুরের গুড়ের চা ৩০ টাকা, হরলিক্স চা ২০ টাকা, পাউডার দুধের চা ১৫ টাকা, টু লেয়ারের চা ২৫ টাকায় বিক্রি করেন। সামনে কাজুবাদাম ও তন্দুরি চা চালু করার পরিকল্পনা আছে বলেও জানান রাকিব।
নিয়মিত ক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাকিব ভাইয়ের চা মানেই স্পেশাল চা। তার মাল্টা চা অসাধারণ। চাঁদপুর শহরের অনেক জায়গায় এসব চা বিক্রি করে কিন্তু তার বানানো চা একবারে আলাদা। যখনই সময় পাই এখানে চা পান করতে চলে আসি।’

আরেক ক্রেতা মেহেদী হাসান শিহাব বলেন, ‘কাজের ক্ষেত্রে ঢাকায় থাকা হয় বেশি। কিন্তু সপ্তাহে দু একদিন এলে এখানে চা পান করতে ভুলি না। রাকিব বিভিন্ন ধরনের চা বিক্রি করেন। খুব ভালো চা বানাতে পারেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা কাস্টমারের সঙ্গে তার আন্তরিকতা অনেক ভালো।’
রাকিবের বাবা সেলিম বেপারী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের প্রতি কাস্টমারের মায়া-মহব্বত বেশি, তাই এখানে চা পান করতে আসেন। বিকেল থেকে দোকান শুরু হলেও সন্ধ্যা থেকে পুরোপুরি চা বিক্রি শুরু হয়। আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে কাস্টমারের হাতে চা পরিবেশন করি। এই ধারাবাহিকতা আমরা সবসময় রাখতে চাই। মানুষের বিশ্বাস ও আস্থার মূল্য আমরা দেবো।’
এসআর/জেআইএম