তিস্তার পানি কমলেও ভোগান্তি কমেনি মানুষের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ১০:২২ এএম, ০৪ আগস্ট ২০২৫

কয়েকদিন ধরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া তিস্তার পানি কমে এসেছে। সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানির পরিমাণ ছিল ৫২ দশমিক ১০ মিটার। যা বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচে।

এর আগে রোববার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে যায়। পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সবগুলো জলকপাট খোলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

তিস্তার পানি কমলেও ভোগান্তি কমেনি মানুষের

পাউবো সূত্র জানায়, ভারতের উজানে ভারী বর্ষণের ফলে নদীতে পানির প্রবাহ হঠাৎ বেড়ে যায়। রাতে পানি বাড়ায় লালমনিরহাটের তীরবর্তী চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে আমন ধান, সবজির মাঠ ও পুকুর। সড়কপথ যোগাযোগ বন্ধ থাকায় এখন নৌকা ও ভেলা হয়ে উঠেছে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম।

বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচে এবং ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১৩২ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।

এদিকে জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বেশ কিছু নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে পাটগ্রামের দহগ্রাম, গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী ও ডাউয়াবাড়ী; কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈইলমারী ও নোহালী; আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্ধন, কালমাটি, বাহাদুরপাড়া ও পলাশী; সদর উপজেলার ফলিমারী, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ী ও গোকুন্ডা ইউনিয়ন।

তিস্তার পানি কমলেও ভোগান্তি কমেনি মানুষের

গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, গতকাল দিন থেকে পানি বাড়তে বাড়তে রাতেই ঢুকে গেছে। আমরা খুব কষ্টে আছি। গরু ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছি। কোনো জনপ্রতিনিধি বা সরকারি লোক খোঁজও নেয়নি। আমরা কি স্থায়ী সমাধান কখনোই পাবো না?

খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের নুর আলম বলেন, সারারাত পানি ঢুকেছে। রান্না-বান্না বন্ধ। কেউ দেখতেও আসছে না। বাচ্চারা স্কুলেও যেতে পারছে না। রাজনৈতিক নেতারা শুধু লিস্ট নিচ্ছে, ত্রাণ বা সহায়তা কিছুই দিচ্ছে না।

পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুণীল কুমার বলেন, রোববার তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বর্তমানে পানি বিপৎসীমার নিচে নামলেও নিম্নাঞ্চলে সতর্কতা জারি রয়েছে। দুই-তিন দিন এই পরিস্থিতি স্থায়ী থাকতে পারে। তবে পানি আর বাড়বে কি না তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

মহসীন ইসলাম শাওন/এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।