লালমনিরহাটে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ত্রাণের অপেক্ষায় বানভাসিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ০৫:১৬ পিএম, ০৪ আগস্ট ২০২৫

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বর্তমানে তা ১৮ সেন্টিমিটার নিচে নেমে এসেছে। তবে এরই মধ্যে সদর ও আদিতমারী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ৩০টিরও বেশি গ্রামে ঢুকে পড়েছে পানি। ফলে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে ডালিয়া ব্যারাজে খুলে রাখা হয়েছে ৪৪টি জলকপাট।

সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ৩টার তথ্যানুযায়ী, তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড হয়েছে ৫২ দশমিক ০০ মিটার, যা বিপৎসীমার (৫২.১৫ মিটার) ১৫ সেন্টিমিটার নিচে। কাউনিয়া পয়েন্টে পানি রয়েছে ২৯ দশমিক ১২ মিটার, বিপৎসীমার ২৯.৩০ মিটার থেকে ১৮ সেন্টিমিটার নিচে। অন্যদিকে ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে পানি রয়েছে ২৯ দশমিক ৭৮ মিটার, যা বিপৎসীমার থেকে ১০৯ সেন্টিমিটার নিচে। পাটগ্রাম পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমা থেকে ৩৬৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।

এদিকে রোববার রাতভর পানি প্রবেশের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা। বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার, শিশুদের খাবার, স্যানিটেশন ব্যবস্থা এবং পশু খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ধসে পড়েছে কিছু সড়কও। কৃষি জমি ও মাছচাষে দেখা দিয়েছে ক্ষতির আশঙ্কা।

পানিবন্দি মরিয়ম বেগম বলেন, রাত থেকে ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে, রান্নাঘরেও পানি। সারাদিনও রান্না করতে পারিনি। গরুকে গাছের পাতা খাওয়াচ্ছি। সরকারিভাবে কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি।

লালমনিরহাটে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ত্রাণের অপেক্ষায় বানভাসিরা

আদিতমারী ভাদাই খোলাহাটি গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, গরু-ছাগল মসজিদের বারান্দায় রেখেছি। নিজে হোটেলে গিয়ে ১০ টাকা দিয়ে খেয়েছি। মেম্বার ফোন দিয়েছিল, যাচ্ছি দেখি কী দেয়!

জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন, হাতিবান্ধায় ১৮০০ জন, কালীগঞ্জে ১০০০ জন, আদিতমারীতে ৪০০০ ও সদরে ১৫০০ জন।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ভারতের উজানে বৃষ্টিপাতের কারণে পানি বাড়ছে-কমছে। এখন পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

লালমনিরহাট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা শাহরিয়ার তানভীর আহমেদ বলেন, হাতীবান্ধায় দ্বিতীয় দফা পানির বৃদ্ধিতে ত্রাণ হিসেবে ২০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী অন্যান্য উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হবে।

মহসীন ইসলাম শাওন/জেডএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।