পল্লী বিদ্যুতের ৮ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর গণছুটি
নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম, প্রশাসন) মো. রাশেদুল আলম খন্দকারসহ ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে গণছুটির ঘোষণা দিয়েছেন জেলায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের গণছুটির ঘোষণা দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। এতে জেলার ১০ উপজেলাসহ পাশের সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা ও মধ্যনগরে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মারাত্মক শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূতকরণ এবং অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নসহ চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের স্থায়ী নিয়োগের দাবিতে গত বছরের জানুয়ারিতে আন্দোলন শুরু হয়। ওই আন্দোলনে জড়িত থাকায় ওই বছরের অক্টোবরে ১০ কর্মকর্তার নামে মামলা হয়। তাদের মধ্যে বারহাট্টা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ের এজিএম মনির হোসেনসহ চারজনকে ১৭ অক্টোবর গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর নেত্রকোনায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রায় আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখেন। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান।
মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে গত ৩১ আগস্ট আবার আন্দোলন শুরু করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর গত মঙ্গলবার নেত্রকোনার এজিএম (প্রশাসন) রাশেদুল আলম খন্দকারকে সাময়িক বরখাস্ত করে পটুয়াখালীতে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরদিন সকালে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একত্র হয়ে আন্দোলন শুরু করলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান পরিস্থিতি শান্ত করেন। কিন্তু বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার না করে উল্টো বৃহস্পতিবার দুপুরে সহকারী এনফোর্সমেন্ট কো-অর্ডিনেটর মো. ওমর ফারুক, প্রকৌশলী মো. আবু হাসান, বিলিং সহকারী জ্যাকুলিন বাশারকে বরখাস্ত করা হয়। এর প্রতিবাদে দুপুর ২টা থেকে সমিতির অধীনে কর্মরত ৮০৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী গণছুটির ঘোষণা দেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগকেন্দ্রের মুঠোফোন,গাড়ির চাবিসহ বিভিন্ন জরুরি পরিষেবার জিনিসপত্র সদর দপ্তরের মহাব্যবস্থাপকের টেবিলে বুঝিয়ে দিয়ে তারা কর্মস্থল ত্যাগ করেন।
নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক আকরাম হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত জেলাসহ পাশের দুটি উপজেলায় বিদ্যুতের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তারা নিয়ম মাফিক ছুটিতে যাননি। সদর দপ্তরসহ জোনাল ও সাব-জোনাল ১২টি কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গণছুটিতে গেলেও ২০টি উপকেন্দ্রে লোকজন রয়েছে। তবে আন্দোলন প্রত্যাহার না করলে বেশ কিছু সমস্যায় পড়তে হবে। আরইবি যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবে, সেই অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, বিষয়টি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে। দ্রুত তারা ইতিবাচক সমাধানে পৌঁছাতে সক্ষম হবেন।
এইচ এম কামাল/এএইচ/এমএস