কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জাতীয় মহাসড়ক এখন ‘হেরিং বোন’!

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ০৪:০৫ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫
কার্পেটিং উঠে গিয়ে ‘হেরিং বোন বন্ডে’ পরিণত হয়েছে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জাতীয় মহাসড়ক। ছবি-জাগো নিউজ

জায়গায় জায়গায় ছোট-বড় খানা-খন্দ। উঠে গেছে কার্পেটিং। কোথাও কোথাও উঁচু-নিচু। এমনই বেহাল দশা কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জাতীয় মহাসড়কের। এতে সড়কে কমছে যানবাহনের গতি। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে প্রায় আড়াই কিলোমিটার হেরিং বোন বন্ডে (ইটের সড়ক) পরিণত হয়েছে। সড়কটির কুষ্টিয়া অংশের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ১০ কিলোমিটারই বর্তমানে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত। কিছু কিছু জায়গা চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী।

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জাতীয় মহাসড়ক এখন ‘হেরিংবন’!

সরেজমিন কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেট থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে দেখা যায়, ভাদালিয়া থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কে মাঝে মাঝেই খান্দাখন্দ ও উচুঁ উচুঁ ঢিবি তৈরি হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সড়ক। এই অংশটুকু ধীরে ধীরে ‘হেরিং বোন বন্ড’ (এইচবিবি) হয়ে যাচ্ছে।

এই মহাসড়কে নিয়মিত চলাচলকারী গড়াই পরিবহন বাসের চালক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘গত একবছরে রাস্তা সবচেয়ে বেশি ভেঙেছে। আগের এক ঘণ্টার পথ এখন দুই ঘণ্টা লাগছে। ভাঙাচোরায় পড়ার কারণে হরহামেশা গাড়ি নষ্ট হচ্ছে।’

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জাতীয় মহাসড়ক এখন ‘হেরিংবন’!

যশোরে চাকরি সূত্রে মহাসড়কটি দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন আসাদুল ইসলাম শাহিন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই এটা কার্পেটিং সড়ক হিসেবে দেখছি। এখন কী এমন অভাবে পড়লাম যে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি হেরিং বোন বন্ড করতে হচ্ছে। দ্রুত এটি আগের আদলে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. রশিদুজ্জামান বলেন, ‘দেশের উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটি এভাবে চলতে পারে না। যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অহরহ ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। শহর থেকে ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে সময় বেশি লাগছে। সঙ্গে ভোগান্তি তো রয়েছেই।’

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জাতীয় মহাসড়ক এখন ‘হেরিংবন’!

জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, ‘এই সড়ক সংস্কারে কোনো বাজেট নেই। বিভিন্ন রাস্তা রিপেয়ার করার জন্য আমাদের যে ইট থাকে, তাই দিয়ে হেরিং বোন বন্ড করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘৭-৮ বছর আগে সড়কটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। এখন নতুন প্রকল্পের আবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনো উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।’

আল-মামুন সাগর/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।