ঘূর্ণিঝড় মোন্থা
বৃষ্টি-বাতাসে নুয়ে পড়েছে ধান, সবজির ক্ষেতে পানি
শেরপুরে গত ৩ দিনের বৃষ্টি ও বাতাসে নুয়ে পড়েছে রোপা আমন ধান গাছ। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাবে আলু ক্ষেত, সবজির জমিসহ বিভিন্ন ফসলি জমিতে বৃষ্টির পানি জমেছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কায় কৃষকের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টি ও বাতাসে ফসলের মাঠে পানি, নুয়ে পড়েছে কাঁচা ও আধাপাকা ধান। কিছু জমির ধান আগেই পেকেছে। আর কয়েকদিন পরই তা কৃষকের ঘরে উঠবে।
সদর উপজেলার চরশেরপুর, পৌরসভা, কামারের চর, ধলা, বাজিতখিলা, চরমোচারিয়া, বেতমারি ঘুঘড়াকান্দি ইউনিয়ন, ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝিকান্দা, সদর, হাতিবান্ধা, ধানশাইল ইউনিয়ন, নালিতাবাড়ী উপজেলার রাজনগর, নয়াবিল, রূপনারায়ণকুড়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন, নকলা উপজেলার বানের্শদী, চন্দ্রকোনা, শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজির চর, ভেলুয়া, কুড়িকাহনিয়া, কাকিলাকুড়া ইউনিয়নে বৃষ্টিতে কৃষকের জমির ধান গাছ হেলে পড়ে গেছে। বৃষ্টি না কমলে তা ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অনেকেই আবার পানি থেকেই আধাপাকা ধান কাটছেন।
শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজির চর ইউনিয়নের লংগড়পাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান, শামছুল হোসেন, সেকান্দর মিয়াসহ অনেকেই ঘরে ফসল ঠিকঠাকভাবে উঠবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন।
তারা জানান, প্রায় শেষ মুহূর্তে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। এমনিতেই তাদের জমি তুলনামূলক নিচু। এবার ঋণ করে ধান চাষ করেছিলেন, ফলনও ভালো হয়েছিল। কিন্তু শেষ মূহুর্তের বৃষ্টিতে তারা ক্ষতিতে পড়ে গেছেন।
সদরের চরশেরপুর ইউনিয়নের যোগিনীবাগসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা জানায়, শীতকালীন সবজির ক্ষেতে হঠাৎ বৃষ্টিতে পানি উঠেছে। এতে আলু, মূলা ও লালশাকের ফসলের ক্ষতি হবে।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে জেলায় ৯৩ হাজার ৬৯৩ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও নিয়মিত পরিচর্যায় ফলন ভালো ফলনের আশা কৃষকদের। এখন প্রায় সব জমিতে ধানের শীষ বের হয়েছে। আর কয়েকদিন পর তা কৃষকের ঘরে উঠবে। ইতোমধ্যে জেলায় চার শতাংশ জমির পাকা ধান কাটা হয়েছে।
শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাবে সৃষ্ট লঘুচাপে গত ২৯ অক্টোবর সকাল থেকে থেমে থেমে হালকা বৃষ্টি ও বাতাস হচ্ছে। এর ফলে জেলায় ৩০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতির মুখে পড়েছে। আর ১৫ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজির জমিতে পানি উঠেছে। আমরা কৃষকদের সেগুলো তুলে আঁটি বেঁধে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। আর যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে দ্রুত এসব ক্ষতির আশঙ্কা কেটে যাবে।
মো. নাঈম ইসলাম/এনএইচআর/এমএস