ভোলাগঞ্জে খুললো স্থলশুল্ক স্টেশন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিলেট
প্রকাশিত: ১০:০০ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

সিলেটের ভোলাগঞ্জ স্থলশুল্ক স্টেশনকে দেশের ২৪তম স্থলবন্দর হিসেবে উদ্বোধন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সিলেটের ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন।

এর আগে ২০১৯ সালে ভারত থেকে পাথর আমদানির অন্যতম রুট সিলেটের ভোলাগঞ্জ স্থলশুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। ঘোষণার চার বছর পর জমি অধিগ্রহণসহ নানা ঝামেলা চুকিয়ে গত বছর ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থলবন্দর নির্মাণকাজ শুরু হয়।

কিন্তু কাজ শুরুর এক মাসের মাথায় ৫ আগস্টের পরে নির্মাণাধীন স্থাপনায় ভাঙচুর ও লুটপাট করে নির্মাণ সামগ্রী। কেটে নিয়ে যায় বুলডোজার চেইন ডোজার ও এস্কেভেটর। যার ফলে ফের পিছিয়ে পড়ে স্থলবন্দর নির্মাণ কাজ। তবুও দুই বছরের মাথায় শেষ হয়েছে প্রকল্পের কাজ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর শুধু আমদানি-রপ্তানিকেন্দ্রিক নয়, এটি পর্যটনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। সাদাপাথরকে ঘিরে পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে বন্দরের ভেতরে আধুনিক ক্যাফেটেরিয়া, মসজিদ, কাঁচঘেরা দোতলা পোর্ট ভবন, তিনতলা মাল্টি এজেন্সি ভবন, একটি গেস্ট হাউস, দুটি ডরমিটরি ও একটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে।

পর্যটকদের সুবিধার জন্য রাখা হয়েছে পার্কিং, চিকিৎসাসেবা, খাবার ও থাকার ব্যবস্থা। প্রতিটি স্থাপনার জন্য আলাদা সড়ক ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম, পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (সদর ও প্রশাসন) মোহাম্মদ মাসুদ রানা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রবিন মিয়া, সহকারী কমিশনার (ভূমি) পলাশ তালুকদার, ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের ইনচার্জ গিয়াস উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের প্রকল্প পরিচালক সারোয়ার আলম বলেন, ‘এই বন্দর পুরোপুরি পর্যটনবান্ধবভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে নির্মিত রেস্টুরেন্ট, গেস্ট হাউস, মসজিদ ও মেডিক্যাল সেন্টার শুধু বন্দর ব্যবহারকারীদের নয়, স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরাও ব্যবহার করতে পারবেন।’

বর্তমানে ভোলাগঞ্জ দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৮০ থেকে ৩০০ ট্রাক চুনাপাথর আমদানি হয়, যা এতদিন ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছিল। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, আধুনিক ব্যবস্থাপনা চালু হলে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যেই এই কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাবে। বন্দর চালুর পর ট্রাক চলাচল হবে নির্ধারিত রুট দিয়ে, ফলে প্রধান সড়কে পর্যটকদের যাতায়াতে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। পর্যটকরাও সহজে বন্দর এলাকা অতিক্রম করে সাদাপাথরের নৌঘাটে যেতে পারবেন।

আহমেদ জামিল/আরএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।