দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে, এলাকায় তোলপাড়

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই গ্রামে কবিরাজির মাধ্যমে কথিত প্রেমিককে পাইয়ে দেয়ার আশ্বাসে দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করেছেন আকিল আহম্মেদ (৪৮) নামে এক কবিরাজ। পরে ধারণ করা ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা প্রকাশ হলে বুধবার বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী আকিল আহম্মেদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে। ঘটনার পর থেকে আকিল আহম্মেদ পলাতক। তিনি চান্দাই গ্রামের আব্দুল বারী সরদার ঝুলনের ছেলে।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, প্রায় এক বছর আগে চান্দাই উচ্চবিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে (১৫) কবিরাজির মাধ্যমে তার সাবেক প্রেমিকের সঙ্গে মিলিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন আকিল আহম্মেদ।
তার কথামতো রাত ১১টার দিকে ওই ছাত্রী তার বাড়িতে আসলে কবিরাজির একপর্যায়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এ সময় স্থানীয় ডিসলাইন ব্যবসায়ী রঞ্জুসহ কয়েকজন ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণ করে। পরে এ ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গত এক বছর ধরে নিয়মিত ধর্ষণ করা হয় ওই ছাত্রীকে।
সম্প্রতি একদিন বিকেলে এক স্কুলছাত্রী (১৩) কবিরাজকে ওই ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে। পরদিন কৌশলে ওই ছাত্রীকেও আকিল আহম্মেদ বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে ভিডিও করে রাখেন।
কয়েকদিন আগে দুই ছাত্রী এমন অপকর্মে বাধা দেয়ায় কবিরাজ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও ফুটেজ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন।
বর্তমানে ফুটেজটি এলাকার মানুষের হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় লোকলজ্জায় দুই ছাত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না।
চান্দাই উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইয়াহিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে তারা আর স্কুলে আসছে না। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। কিসব ভিডিও নাকি সবার মোবাইলে ছড়িয়ে পড়েছে।
চান্দাই ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান জানান, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি।
বড়াইগ্রাম থানা পুলিশেরর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহরিয়ার খান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরদিকে অভিযুক্ত আকিল আহম্মেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
রেজাউল করিম রেজা/এএম/আরআইপি