গোপিনাথপুরে যাত্রার নামে চলছে অশ্লীল নাচ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার ঐতিহাসিক গোপিনাথপুর মেলায় যাত্রা ও বিচিত্রার নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শনী। উদ্বোধনের দিন থেকেই লাকি কুপনের নামে জুয়া, সার্কাস ও যাত্রাপালার নামে অশ্লীল নৃত্য চলছে।
উপজেলার গোপিনাথপুরে প্রায় মাস ব্যাপী চলে এই দোলযাত্রা মেলা। মেলায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড চললেও প্রশাসন নীরব। স্কুল কলেজের ছাত্ররা রাতভর এসব অশ্লীল নৃত্য দেখছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এতে শুধু যুব সমাজ নয় নৈতিকতার অবক্ষয়ের শিকার হচ্ছে স্কুলগামী কিশোররাও। কারণ এলাকার সব শিশু-কিশোর রাতে এই মেলায় যায় আর অশ্লীল নৃত্য উপভোগ করে।
সরজমিনে রোববার রাতে গিয়ে দেখা গেছে, মেলায় ৬টি যাত্রা, ৩ সার্কাস ও ১৫টি বিচিত্রার নামে মঞ্চ তৈরি করে প্রতিদিন সকাল থেকে ভোর রাত অবধি চলছে অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শনী।
জেলা-উপজেলা শহর থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জে এমনকি পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে রিকশা, অটোরিকশা ও পিকআপে মাইক বেঁধে প্রচারণা চালিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করা হচ্ছে মেলায়। এসব প্রচারণায় লোকজনকে আকৃষ্ট করতে অশ্লীল বাক্যও ব্যবহার হয়।
এদিকে, মেলায় এসব অশ্লীল নৃত্যদেখার অর্থ যোগাতে এলাকার কিছু বিপথগামী যুবকরা ছিনতাইয়ের পথ বেছে নিয়েছে বলে জানা গেছে। মেলায় যাওয়ার পথে ও গভীররাতে ফেরার পথে পথচারীদের অস্ত্রের মুখে সবকিছু ছিনিয়ে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া মেলাতেও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরে ১৩ জন গরু ব্যবসায়ী প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকা হারিয়েছেন। এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে কোনো কাজ হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, মেলায় অশ্লীল নৃত্য চালানোর জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাঈদ জোয়ার্দ্দার দায়ী। কারণ স্থানীয় এসব আওয়ামী লীগ নেতা এখান থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা নেন। এর সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনও জড়িত বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক আব্দুর রহিম বলেন, মেলায় সুস্থ ধারার যাত্রার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সামজিক অবক্ষয় ঘটবে এমন কোনো কর্মকাণ্ডের অনুমোদন দেয়া হয়নি। অশ্লীল কর্মকাণ্ড ঘটলে এসব বন্ধে জেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
এ ব্যাপারে সুপার রশিদুল হাসান বলেন, যাত্রার নামে যদি অশ্লীল কিছু প্রদর্শনী হয় তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে ওই অশ্লীল নৃত্যের ছবি তুলে আনেন। পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাশেদুজ্জামান/এএম/আরআইপি