হস্তান্তরের আগেই মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির দেয়াল-ছাদে ফাটল


প্রকাশিত: ০২:০৮ পিএম, ৩০ মার্চ ২০১৭

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে শ্রী অতুল চন্দ্র মন্ডল নামে এক মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি হস্তান্তরের আগেই দেয়াল ও ছাদে ফাটল  দেখা দিয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে উপজেলা জালালপুর গ্রামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়িটি নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে।

দরপত্রের শর্ত অনুয়াযী ছয় মাসের মধ্যে বাড়িটি নির্মাণের কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার তা চৌদ্দ মাসেও শেষ করতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে গিয়ে দেখা য়ায়, জাতীয় পতাকার আদলে বাড়িটি লাল-সবুজ রঙ করা হয়েছে। ঘরের দরজা এখনো লাগানো হয়নি। বৈদ্যুতিক কাজও এখনো শেষ হয়নি। বাড়ির ভেতরে ঢোকে দেখা গেল, একটি ঘরের দেয়ালের তিনটি স্থানে ও ছাদে ফাটল ধরেছে।

মুক্তিযোদ্ধা অতুল চন্দ্র মন্ডল বলেন, একই সঙ্গে অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। নির্দিষ্ট সময়ে তারা বাড়ি বুঝিয়ে পেয়েছেন। বাড়িটি ছয় মাসে হস্তান্তরের কথা ছিল।

কিন্তু তিনি চৌদ্দ মাসেও বাড়িটি সম্পূর্ণ হয়নি। বাড়ি নির্মাণের শুরুতেই দুই একদিন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এসেছিলেন। এরপর ঠিকাদারকে আর এখানে আসেননি। ঠিকাদার নিম্নমানের শ্রমিক দিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করেছেন।

কাজটি তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী এসে চেয়ার পেতে রাস্তায় কিছুক্ষণ বসে থেকে চলে যেতেন। শ্রমিকেরা কী কাজ করছে তা তিনি কখনো দেখতেন না।

বাড়িটি নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করায় হস্তান্তরের আগেই  বাড়ির একটি ঘরের তিনটি স্থানে ও ছাদে ফাটল ধরেছে। দিন যতই যাচ্ছে ফাটলের আকার আরও বাড়ছে। এই বাড়িতে বসবাস করা নিরাপদ হবে কিনা তা নিয়ে ভাবনায় পড়েছি।

আক্কেলপুর উপজেলা প্রকৌশলীর (এলজিইডি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা প্রকল্পের আওয়ায় সাত লাখ ৫৫ হাজার ৩০৫ টাকা ব্যয়ে অতুল চন্দ্র মন্ডলের বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। মেসার্স সাইদুল ইসলাম নামে সিরাজগঞ্জের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কার্যাদেশ পেয়ে গত ১৫ জানুয়ারি ২০১৬ সালে বাড়িটি নির্মাণকাজ শুরু করে। দরপত্রে শর্ত অনুযায়ী একই বছরের ১৬ জুন বাড়িটি হস্তান্তরের কথা ছিল।

কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে নির্মাণকাজে বিলম্ব করেছেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বার বার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময়ে কাজটি শেষ করতে পারেনি। এর মধ্যে ঠিকাদার সাড়ে চার লাখ টাকা বিল তুলে নিয়েছেন।

মেসার্স সাইদুল ইসলাম ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক পরিচয় দিয়ে মোজাম্মেল হক পিন্টু নামে এক ব্যক্তি মুঠোফোনে বলেন, মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেটি সমাধানের পর বাড়িটি হস্তান্তর করা হবে। বাড়িটি নির্মাণের কাজ এখনো শেয় হয়নি।

আক্কেলপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) নুরুল ইসলাম বলেন, আমি নিজে মুক্তিযোদ্ধার বাড়িটি দেখে এসেছি। বাড়িটি খুব সুন্দর হয়েছে। তবে বাড়িটির একটি ঘরের দেয়ালে তিনটি স্থানে ফাটল ধরেছে। সেটি নির্মাণ ক্রুটির কারণে হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাশেদুজ্জামান/এএম/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।