হাতুড়ি পেটার পর সাংবাদিককে ফাঁসানোর চেষ্টা


প্রকাশিত: ০৩:০৪ এএম, ০১ এপ্রিল ২০১৭

সাংবাদিককে হাতুড়ি পেটা করার পর বিবস্ত্র করে নারীর সঙ্গে ছবি তুলে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। নগ্ন ছবি তুলে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ফেসবুকে। বৃহস্পতিবার রাতে কালিগঞ্জ উপজেলার মহৎপুর গ্রামের পরীর বাগানে পরিকল্পিত এ ঘটনাটি ঘটানো হয়। ঘটনার খবর শুনে রাতেই ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে কালিগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে। শুক্রবার বিকেলে আটকদের সাতক্ষীরা আদালতে পাঠানো হয়।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, পরিকল্পিতভাবে সাংবাদিক সাজুকে এক সঙ্গে ছবি তুলে আপত্তিকর অবস্থায় আটক নাটক সাজিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।

ঘটনার শিকার সাংবাদিক সাজেদুল হক সাজু উপজেলার কুলিয়া দুর্গাপুর গ্রামের শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তিনি কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের দফতর সম্পাদক ও স্থানীয় `দৈনিক দক্ষিণের মশাল` পত্রিকার কালিগঞ্জ প্রতিনিধি। নির্যাতিত নারী দুই সন্তানের জননী মেহেরুন নেছা মিরা একই গ্রামের মোনাজাত আলীর মেয়ে।

শুক্রবার দুপুরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়। এসময় আটক সাংবাদিক ও ওই নারী তাদের বক্তব্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকের কাছে উপস্থাপন করলে বিচারক তাদের সাজা না দিয়ে থানা পুলিশকে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশনা দেন। পরবর্তীতে থানা পুলিশ ২৯০ ধারায় মামলা দিয়ে তাদের সাতক্ষীরা আদালতে পাঠায়।

সাংবাদিক সাজেদুল হক সাজু জানান, রাত ৭টার দিকে বাড়িতে ফিরে মটরসাইকেল রেখে কুলিয়াদুর্গাপুর বিলে মৎস্য ঘেরে মাছের মড়ক দেখতে যান। কিছুক্ষণ পর কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ছেলে মেহেদী হাসান সুমনের নির্দেশে মহৎপুর গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক, দ্বীন আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম, গোলাম রহমানের ছেলে আলাউদ্দীন, জামাদি আওয়ালের ছেলে অনুশা, কুলিয়াদুর্গাপুর গ্রামের কেরামত আলীর ছেলে হাসান আলী, সামছুর রহমানের ছেলে লতিফুর রহমান আতর্কিতভাবে হামলা চালায়।

এ সময় তারা তার হাত বেঁধে পিটাতে পিটাতে মহৎপুর গ্রামের পরীর বাগানে নিয়ে যায়। তারপর পাশে মেহেরুন নেছাকে বিবস্ত্র করে তানভীর আহম্মেদ উজ্জ্বল তার মোবাইলে ছবি তুলতে থাকে।

নির্যাতিত নারী মেহেরুন নেছা মিরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই সন্তান নিয়ে তিনি নাজিমগঞ্জ বাজারে আসেন। তার বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় মহৎপুর গ্রামের জুলুর ছেলে নাজমুল হোসেনের বাড়িতে ল্যাপটপ চার্জে দেন। সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে ল্যাপটপ আনতে গেলে নেতা মেহেদী হাসান সুমনের পরিকল্পনা মাফিক ল্যাপটপ দিতে নাজমুল কালক্ষেপণ করতে থাকে।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ল্যাপটপ দিয়ে নাজমুল বাগানের ভিতর দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার নাম করে মাঝ পথে যাওয়া মাত্রই পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা সহযোগী হাসান ও অনুশা তাকে জাপটে ধরে বেঁধে বিবস্ত্র করে ফেলে। এরপর হাত-পা চোঁখ বাঁধা অবস্থায় পিটাতে পিটাতে সাংবাদিক সাজুকে পাশে এনে দাঁড় করায়।

এসব বিষয়ে কালিগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লস্কর জায়েদুল হক জাগো নিউজকে বলেন, স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশে খবর দিলে তাদের উদ্ধার করা হয়। সাংবাদিক হওয়ায় চেষ্টা করা হয়েছিল স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার কিন্তু সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে পাঠানো হয়। তবে তারা স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নিয়মিত মামলা দিয়ে তাদের জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আকরামুল ইসলাম/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।