জয়পুরহাট কলেজের ৬ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত


প্রকাশিত: ০৩:২৫ এএম, ০৩ এপ্রিল ২০১৭

জয়পুরহাট সরকারি কলেজের কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছয় ছাত্র-ছাত্রীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উৎকোচ না দেয়ায় তাদের এই ভোগান্তি বলে অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পরীক্ষার্থী। সেই সঙ্গে রোল নম্বর ছাড়াই পরীক্ষা দিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।

গতকাল রোববার প্রবেশপত্র ছাড়াই বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও মঙ্গলবার বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষায় প্রবেশপত্র ছাড়া অংশগ্রহণ করতে দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সরকারি মহিলা কলেজ পরীক্ষা কর্তৃপক্ষ।

প্রবেশপত্র ছাড়া এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা হচ্ছে, বিজ্ঞান বিভাগের সাজেদুর রহমান, অনুরাধা মহন্ত,শাহরিয়ার হোসেন, মোছা কুইন বানু (অনিয়মিত), মানবিক বিভাগের নূরুল আহাদ মন্ডল হাসিবুল হাসান, ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের গোলাম কিবরিয়া।

পরীক্ষার্থী মোছা কুইন বানুর আত্মীয় জয়পুরহাট ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ওহিদুজ্জামান রকি বলেন, পরীক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল জলিল আমার কাছে সবকিছু সংশোধন করে প্রবেশপত্র আনতে পাঁচ হাজার টাকা চেয়েছিল।

পরীক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রভাষক আব্দুল জলিল বলেন, অধ্যক্ষের প্রতি স্বাক্ষর নিয়ে পিয়ন এনামুলকে পাঠানো হয়েছিল। সে বোর্ডে গিয়ে প্রবেশপত্র পেতে নতুন করে ব্যাংক ড্রাফট করতে হবে বলে উক্ত টাকার কথা বলেছিল।

জয়পুরহাট সরকারি কলেজের পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মমতাজ আলী বলেন, ফরম পূরণের ১০ দিন পর সম্ভাব্য তালিকায় কুইন বানুর নাম আসলেও বাকি ৫ জনের নাম আসেনি। রাজশাহী বোর্ডে বার-বার যোগাযোগ করার পরও তাদের প্রবেশপত্র পাওয়া যায়নি। তবে রাজশাহী বোর্ডের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ছয়জন পরিক্ষার্থী গতকালের পরীক্ষা দিয়েছে।

আমরা আশা করছি আগামী বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র পাব। দিনাজপুর বোর্ড থেকে যারা রাজশাহী বোর্ডে ছাড়পত্র নিয়ে এসেছেন তাদের এই সমস্যা হয়েছে কারণ দিনাজপুর বোর্ডে রেজিস্ট্রেশন করতে দেরি হয় বলে জানান। উৎকোচ নেয়ার কথা বললে অস্বীকার করেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পরীক্ষার্থীরা জানান, আমরা পরীক্ষার খাতায় রোল নন্বর ছাড়াই শুধু রেজিস্ট্রেশন দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। পরে রেজাল্ট কী হবে জানি না।

জয়পুরহাট সরকারি মহিলা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মোজাফফর হোসেন বলেন, বোর্ডের নির্দেশনায় আজকের বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষায় ছয়জন পরীক্ষার্থীকে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়েছে এবং আলাদা করে ছয়জনের খাতা বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। আগামী পরীক্ষায় প্রবেশপত্র নিয়ে না আসলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না।

জয়পুরহাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, বোর্ডে প্রবেশপত্র নিতে গেছে আজকের মধ্যে প্রবেশপত্র হাতে পাওয়া যাবে। ছাত্র-ছাত্রীদের এই বিড়ম্বনার কথা জিজ্ঞেস করাতে পরীক্ষা কমিটি ব্যাপারটি ভালো জানে বলে এড়িয়ে যান তিনি।

রাজশাহী বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক তরুণ কুমার সরকার বলেন, ছয়জন পরীক্ষার্থীর কাগজপত্রসহ একজন শিক্ষক প্রতিনিধিকে পাঠালে আমি ব্যাপারটা দেখব। আগামীকাল মঙ্গলবারের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাগজপত্র দেখা ছাড়া কোনো কিছুই বলা যাবে না।

রাশেদুজ্জামান/এএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।