ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে টিআর প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য সাবিনা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে টিআর প্রকল্পের কাজের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাক্ষেণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১ম পর্যায়ে ২৯ লাখ ১ হাজার ৬১০ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এরমধ্যে উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নে গ্রহণ করা হয়েছে নয়টি প্রকল্প।
সরেজমিনে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় বৈকুণ্ঠপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া খাইরুলের বাড়ি সংলগ্ন সোলার প্যানেল স্থাপনে ৪০ হাজার ৬৭০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ওই এলাকায় বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ইউপি সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন সোলার প্যানেলের আওতায় সুবিধাভোগী পাঁচটি পরিবারকে ৭ হাজার ৫০০টাকা খরচ হবে বলে জানান। তিন মাস আগে রফিকুল, এনামুল, মকুল, ফেরেজা ও হালিমার কাছ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা অগ্রিম আদায়ও করেন।
গত ২১ এপ্রিল বিকেলে প্রকল্পের সোলার প্যানেলটি খাইরুলের বাড়ির টিনে স্থাপন করা হয়। তবে তার বাড়িতে ব্যাটারি রাখার ব্যবস্থা না থাকায় পাশের শরিফুলের বাড়িতে ব্যাটারি রাখা হয়। এছাড়া সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে মিস্ত্রী খরচ দুইশ টাকা করে আদায় করেন ওই ইউপি সদস্য। আবার বাজার থেকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে লোকাল তারও কিনতে হয় সুবিধাভোগীদেরকেই।
কিন্তু ইউপি সদস্য দাবিকৃত ৭ হাজার ৫০০ টাকার অবশিষ্ট বাঁকি টাকা সুবিধাভোগীরা দিতে না পারায় পরদিন ২২ এপ্রিল সকালে সোলার প্যানেলটি খুলে বাড়িতে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগী এনামুল বলেন, বিদ্যুৎ দেয়ার নামে তার কাছ থেকে তিন মাস আগে ১ হাজার টাকা নেয়া হয়। বাঁকি টাকা অন্য সদস্যরা দিতে না পারায় জোর করে সোলার প্যানেলটি খুলে নিয়ে যায় ইউপি সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন।
অপরদিকে, ইউনিয়নের পাতকোলা মোড় থেকে পল্টনের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৫৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। রাস্তার দুই পাশে জমিতে ফসল থাকায় লামছাম ভাবে জোড়াতালি দিয়ে কাজ করা হয়েছে। তবে পাতকোলা মোড় থেকে প্রায় ২শ ফুট আগেই রাস্তা সংস্কার না করে কাজ শেষ দেখিয়ে টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়।
ইউপি সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ইস্টিমেট দেয়া নাই যে এখান থেকে এই পর্যন্ত কাজ শেষ করতে হবে। রাস্তার কাজে যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ সেটুকু কাজ করা হয়েছে। ওই রাস্তার উপর আবার বরাদ্দ এলে কাজ করা হবে।
তবে সোলার প্যানেল দেয়ার নামে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়েছে। তবে সুবিধাভোগী শরিফুলের বাড়িতে সোলার প্যানেল থাকায় সে অন্য কাউকে লাইন না দেয়ায় তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। পরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করে সোলার প্যানেল খুলে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসি।
বদলগাছী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আব্দুল করিম বলেন, যখন প্রকল্পের নাম দেয়া হয় তখন বড় আকারে দেয়া হয়। বরাদ্দ অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ যেটুকু সেটা করা হয়েছে। টিআর প্রকল্প কাজের ক্ষেত্রে পুরোটা দেয়া সম্ভব হয় না। রাস্তার কাজ দেখে এসেছি। তা ঠিক আছে। বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। পরবর্তীতে বরাদ্দ আসলে বাকিটুকু কাজ করে দেয়া হবে।
আব্বাস আলী/এফএ/পিআর