হাতকড়া খুলে পালিয়েছেন আসামি


প্রকাশিত: ০৯:৫২ এএম, ২৫ মে ২০১৫

শেরপুরে পুলিশ কাস্টডি থেকে বিচারিক আদালতে নেয়ার সময় হাতকড়া খুলে হত্যা মামলার এক আসামি পালিয়ে গেছেন। ২৫ মে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। পালিয়ে যাওয়া আসামি হাফিজুর রহমান ওরফে হাফিজুল (৩০) নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে।

এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার জন্য দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সিনিয়র বিচারিক হাকিম-৩ আদালতের বিচারক মো. বুলবুল আহম্মেদ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসাথে পুলিশের আইজি, জেলা ও দায়রা জজ এবং শেরপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিমকে ওই নির্দেশের অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, সোমবার ছিল নালিতাবাড়ীর আলোচিত অটোরিকশা চালক ওমর আলী হত্যা মামলার আসামি হাফিজুরের আদালতে হাজিরার ধার্য তারিখ। সকালে জেলা কারাগার থেকে তাকেসহ অন্যান্য আসামিদের কোর্ট পুলিশের কাস্টডিতে আনা হয়। বেলা ১১টার দিকে কোর্ট পুলিশের কাস্টডি থেকে হত্যা মামলার আসামিসহ ১২ জন আসামিকে হাতকড়া পরিয়ে একসঙ্গে বিচারিক আদালতে হাজির করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এসময় দায়িত্বে ছিলেন কোর্ট পুলিশের কনস্টেবল আব্দুল মোতালেব ও উজ্জল মিয়া। প্রতি জোড়া হাতকড়ায় দুইজন করে আসামির হাত বাঁধা ছিল।

পুলিশ কাস্টডি থেকে সিনিয়র বিচারিক হাকিম-৩ আদালতের দূরত্ব মাত্র ১০০ গজ। কাস্টডি থেকে বের করার সময় ১২ আসামিকে আনা হলেও আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দেখা যায় হত্যা মামলার আসামি হাফিজুর নেই, সেই হাতকড়াটি খোলা অবস্থায়। তখনই কোর্ট ও পুলিশে তোলপাড় শুরু হয়। চারদিকে খোঁজাখুজি শুরু হয়। আদালত চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, পালিয়ে যাওয়া আসামি হাফিজুর রহমান ওরফে হাফিজুল নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী এলাকার অটোরিকশা চালক ওমর আলী হত্যা মামলার প্রধান আসামি। গত ৩১ মার্চ রাতে মধুটিলা ইকোপার্ক থেকে নন্নী আসার পথে অটোরিকশার যাত্রী হাফিজুর তার দুই সহযোগিকে নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে কিল-ঘুষিতে হত্যা করে ওমর আলীর মরদেহ রাস্তার পাশে ফেলে যান। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা হাফিজুলকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আশরাফুল আলম বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তারপর থেকেই তিনি কারগারে রয়েছেন। ওই মামলায় আদালতে আসামি হাফিজুল স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ৪ জনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। ২৫ মে সোমবার ছিল ওই মামলার আসামিদের আদালতে হাজির করার ধার্য তারিখ।

এদিকে, আদালত চত্বরে পুলিশ কাস্টডি থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আদালতের নজরে এলে সিনিয়র বিচারিক হাকিম মো. বুলবুল আহম্মেদ ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারি বিধি মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে সেই নির্দেশের অনুলিপি পুলিশের আইজি, জেলা ও দায়রা জজ এবং শেরপুরে মুখ্য বিচারিক হাকিমকে প্রদান করার আদেশ দেন।  

এ ব্যাপারে কোর্ট আদালতের পরিদর্শক মো. মতিউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে বলেন, আমরা পালিয়ে যাওয়া আসামি হাফিজুরকে খোঁজাখুঁজি করছি। কিভাবে এমন ঘটনা ঘটলো সে বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হবে।

এ বিষয়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. মেহেদুল করিম আদালত চত্বরে পুলিশ কাস্টডিতে থাকা আসামি পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে জানান, পলাতক আসামিকে ধরতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। কেন, কীভাবে এ ঘটনা ঘটলো সেটি খতিয়ে দেখা হবে। কর্তব্যে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

হাকিম বাবুল/এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।