গত বছরের চেয়ে পিছিয়েছে যশোর বোর্ড
সারাদেশের তুলনায় ভালো করলেও যশোর বোর্ড এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে গত বছরের চেয়ে পিছিয়েছে। গতবছর এই বোর্ড ৮৩ দশমিক ৪২ ভাগ পাসের হার নিয়ে দেশসেরা হয়েছিল। এ বছর এই পাসের হার ৭০ দশমিক ০২ ভাগ। জিপিএ-৫ প্রাপ্তিও কমে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৪৪৭ জন পরীক্ষার্থী। এ সংখ্যা গতবছর ছিল ৪ হাজার ৫৮৬।
রোববার দুপুরে প্রকাশিত ফলাফলে এ চিত্র উঠে এসেছে। যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড’র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র এ ফলাফল নিশ্চিত করেছেন।
যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, এ বছর যশোর বোর্ড থেকে ৯৫ হাজার ৬৯২ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৬৭ হাজার ২ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৩৩ হাজার ৮০৮ জন এবং ছাত্রী ৩৩ হাজার ১৯৪ জন। পাসের হার ৭০ দশমিক ০২। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৪৪৭ জন। বহিষ্কৃত হয়েছে ৫৬ জন।
গত বছর এই বোর্ড থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ৫৭২ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৯২৯ জন। পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৪২ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪ হাজার ৫৮৬ জন। পরীক্ষায় বহিষ্কৃত হয়েছিল ৮১ হন। গতবারে তুলনায় এবার পাশের হার কমেছে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যাও কমেছে ২ হাজার ১৩৯।
২০১৫ সালে এই বোর্ডে ১ লাখ ১৪ হাজার ২৭০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল ৫৩ হাজার ২৩৪ জন। এদের মধ্যে ছাত্র ছিল ২৭ হাজার ১৩৬ ও ছাত্রী ছিল ২৬ হাজার ৯৮। পাসের হার মাত্র ছিল ৪৬ দশমিক ৫৯। আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ হাজার ৯৪৫ জন। পরীক্ষায় বহিষ্কৃত হয়েছিল ১২৯ জন।
শিক্ষাবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর যশোর বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৬ হাজার ৪৯৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৩ হাজার ৩১১ জন। পাসের হার ৮১ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৫৪৩ জন। মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৫৮ হাজার ২৩৭ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ৩৭ হাজার ২৩১ জন। পাসের হার ৬৩ দশমিক ৮৪ ভাগ। এই বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৮৩ জন।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২০ হাজার ৯৫৯ জন ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে পাস করেছে ১৬ হাজার ৪৬০ জন। পাসের হার ৭৯ দশমিক ২৯ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়ে ৪২১ জন ছাত্র ছাত্রী। যশোর বোর্ড সার্বিক ফলাফলে এবছর দেশের অন্যান্য বোর্ডের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে।
এ বারের ফলাফলের চিত্র তুলে ধরে যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, ২০১৫ সালে ফল বিপর্যয়ের কারণে গতবছর অনেক শিক্ষার্থী একটি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছিল। এই অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের ফলাফলের কারণে গতবছর পাসের হার অনেক বেশি ছিল। বিপরীতে গতবছর অনুত্তীর্ণের হার কম থাকায় এবার অনিয়মিত পরীক্ষার্থী কম ছিল। এজন্য গতবছরের তুলনায় পাসের হার কিছুটা কম। কিন্তু নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পাসের হারের সাথে তুলনা করলে এবারও যশোর বোর্ডের ফলাফল ভাল।
আর এ বছর যশোর বোর্ডে পদার্থ বিজ্ঞান, ইংরেজি, গণিত, মনোবিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞানের একটি করে পত্রের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা ভাল করতে পারেনি। এজন্য দু’টি পত্রের ফলাফল মিলে তারা উত্তীর্ণ হলেও জিপিএ প্রাপ্তিতে এর প্রভাব পড়েছে। তারপরও যশোর বোর্ডে সারাদেশের তুলনায় ভাল ফলাফল করেছে। আগামীতে এ ধারার আরও অগ্রগতি হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মিলন রহমান/এফএ/পিআর