শেরপুরে রেললাইনের দাবিতে শতপদী পদযাত্রা ও স্মারকলিপি
জেলা সদরকে অন্তর্ভুক্ত করে পর্যটন অঞ্চল ও সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরে রেললাইনের দাবিতে ব্যতিক্রমী ‘শতপদী পদযাত্রা’ শেষে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শহরের চকবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বর্ণিল ‘শতপদী পদযাত্রা’ শুরু হয়। নাগরিক সংগঠন জন উদ্যোগ কমিটির আয়োজিত এ পদযাত্রায় রেললাইনের দাবিতে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডসহ নারী-পুরুষ, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণ স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। পদযাত্রাটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে কালেক্টরেট চত্বরে গিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।
পদযাত্রা শুরুর পূর্বে চকবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জেলা সদরকে অন্তর্ভুক্ত করে শেরপুরে দ্রুত রেললাইন স্থাপনের দাবিতে সহমত প্রকাশ করে স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সুধীবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে জন উদ্যোগের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, শেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ. কে. এম রিয়াজুল হাসান, ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, ডা. সেকান্দার আলী কলেজের অধ্যক্ষ মহিদুল ইসলাম মুকুল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফখরুল মজিদ খোকন, জেলা জাসদ সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, জেলা মহিলা পরিষদ সাধারণ সম্পাদিকা লুৎফুন্নাহার, পাতাবাহার খেলাঘর আসর সভাপতি মো. আনিসুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, কালের কণ্ঠ শুভসংঘের সভাপতি শামীম হোসেন, জেলা উদীচীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম আবু হান্নান, কমিউনিস্ট পার্টির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ খান বাবুল, কবি তালাত মাহমুদ, বিতার্কিক এমদাদুল হক রিপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, শেরপুরে রেলপথ স্থাপন করার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার ১৯৩০-এর দশকে প্রথম পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর রেলপথ স্থাপনের বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে তৎকালীন বাংলাদেশ রেলওয়ে পুনরায় জামালপুর-রাংটিয়া ভায়া শেরপুর রেলপথ স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করে। কিন্তু সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি।
বর্তমান সরকারের সারাদেশে উন্নয়ন ও রেলপথ সম্প্রসারণ নীতির কারণে ২০১৪ সালের ৮ জুন তৎকালীন রেলমন্ত্রী পিয়ারপুর থেকে শেরপুরে রেলপথ স্থাপনের ঘোষণা দেন। এ জন্য প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই কাজও শুরু হয়। কিন্তু অদ্যাবধি শেরপুরে রেলপথ স্থাপনের অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়নি। তাই শেরপুরে রেলপথের দাবিতে এই নাগরিক জাগরণ। সম্ভাবনাময় শেরপুর জেলার পর্যটন শিল্পের বিকাশ, নাকুগাঁও স্থলবন্দর কেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নয়ন, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করার লক্ষ্যে শেরপুরে রেল পরিবহন চালু এখন সময়ের দাবি।
হাকিম বাবুল/আরএস/পিআর