ধর্ষণের ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ
![ধর্ষণের ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2018January/rangamati-rape-20180202185940.jpg)
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে একই বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী। ধর্ষণকালে প্রতিবার ভিডিও চিত্র ধারণ করে তারা। প্রথমবার ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও চিত্র প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ছাত্রীটিকে আরও দুই বার পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা।
পুলিশের কাছে দেয়া প্রাথমিক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামিরা এসব তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাঘাইছড়ি থানার ওসি (তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম।
পুলিশ জানায়, বাঘাইছড়ি উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের সর্দার পাড়ায় চাঞ্চল্যকর এ ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। বুধবার সন্ধ্যায় আমতলীর পাবলাখালী বাজার এলাকা থেকে অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশ। এরপর বৃহস্পতিবার তাদের বিরুদ্ধে বাঘাইছড়ি থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। শুক্রবার বিকেলে রাঙ্গামাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ১৬৪ ধারায় আসামিদের জবানবন্দি নেয়া হয়। আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে আদালত শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিরা হলেন- আমতলী ইউনিয়নের সর্দার পাড়ার বাসিন্দা আবদুস সালামের ছেলে মো. নাঈম হোসেন (১৮), মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. ফরহাদ হোসেন (১৮) ও মৃত আবদুল জলিলের ছেলে মো. হাফিজ উল্লাহ রাহিদ (১৮)। আসামিরা তিনজনেই আমতলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
নির্যাতনের শিকার মেয়েটি একই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। শুক্রবার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ওই ছাত্রীকে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যের বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘাইছড়ি থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিন শিক্ষার্থী মিলে ওই ছাত্রীকে প্রথমবার ধর্ষণ করে ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর। এদিন সকালের দিকে ধর্মীয় শিক্ষার পর বাড়ি ফিরছিল মেয়েটি। এ সময় তার গতিরোধ করে তাকে ডেকে নিয়ে যায় হাফিজ উল্ল্যাহ। এরপর পাশের সেগুন বাগানে নিয়ে হাত-পা বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তিনজন। প্রথমে ধর্ষণ করে নাঈম। ধর্ষণের চিত্র মোবাইলে ধারণ করে অপর দুইজন। পরে ধর্ষণ করে ফরহাদ এবং শেষে হাফিজ উল্ল্যাহ। ধর্ষণের সব চিত্র মোবাইলে ধারণ করে তারা। পরে তা ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে আরও দু’বার মেয়েটিকে ধর্ষণ করে তারা। সর্বশেষ ধর্ষণের ঘটনাাটি ঘটে বুধবার বিকেলে। এর পরপরই ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ফেসবুকে ছাড়ে তারা। এতে ঘটনাটি ফাঁস হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে সঙ্গে সঙ্গে তিন শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। ভিডিও চিত্র ধারণ করা মোবাইলও উদ্ধার করা হয়।
অন্যদিকে লজ্জায় ও ধর্ষকদের হুমকিতে ওই ছাত্রী ঘটনাটি কাউকে জানাতে পারেনি বলে জানায় তার পরিবার। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বাঘাইছড়ি থানায় বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নম্বর-১ তারিখ: ০১/০২/১৮) করেছেন ওই ছাত্রীর বাবা আবদুর রউফ। এছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে রাঙ্গামাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পর্নোগ্রাফি আইনে এফআইআর (নম্বর ৮(১) তারিখ:০১/০২/১৮) রুজু করা হয় বলে আদালত সূত্র জানায়।
সুশীল প্রসাদ চাকমা/আরএআর/পিআর