ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নারী কৃষি শ্রমিকদের আগাম শ্রম বিক্রি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:১৪ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নারী কৃষি শ্রমিকদের হাতে ভাদ্র থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত তেমন কাজ থাকে না। এই সময়টায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন তারা। অভাব-অনটনে অনেকেই কৃষকের কাছে তাই কম দামে আগাম শ্রম বিক্রি করে দিচ্ছেন। মহাজনের কাছ থেকেও চড়া সুদে ঋণ গ্রহণসহ ধার দেনায় জড়িয়ে পড়ছেন অনেকেই। আর যারা আগাম শ্রম বিক্রি বা ঋণ গ্রহণ করতে পারছেন না তারা সময়ের সঙ্গে খাপখাইয়ে চলার চেষ্টা করেছেন।

কৃষি শ্রমিক প্যনতি উরাঁও, শোভা উরাঁও ও বাসন্তী উরাঁও বলেন, আমরা সবাই ভূমিহীন। বাড়ির পুরুষ সদস্যদের অনেকেই কর্মের সন্ধানে এলাকার বাইরে চলে গেছেন। বাড়িতে সামান্য খাবারের মজুদও নেই। দিন আনি দিন খাই। শ্রাবণ মাসে খেত লাগানোর পর হাতে আর তেমন কোনো কাজ থাকে না। রোপা-আমন ধান পাকতে বাকি তিন মাসের মতো। বাধ্য হয়ে আগামী অগ্রহায়ণ মাসে ধান কাটা ও কৃষকের বাড়িতে কৃষি শ্রমিকের কাজ করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। এ জন্য দিন হাজিরা ২০০-২৫০ টাকায় আগাম শ্রম বিক্রি করছেন। অথচ ভরা মৌসুমে তাদের মজুরি থাকে ৪০০-৪৫০ টাকা পর্যন্ত।

তারা আরও বলেন, তাদের অনেকেই বাঁশ, বিন্নার ফুল, তালপাতা আর খেজুর পাতা দিয়ে পাটি, ঝাড়ু, কুলা, ডালি, টোপা, চালুন, খালই ও মাছের ওড়া তৈরি করে তা হাটে-বাজারে বিক্রি করে সংসার চালানোর চেষ্টা করছেন। কেউবা খাল, বিল, ডোবা, নালায় মাছ ও কাকড়া ধরে আর শালুক, শামুক, ঝিনুক কুড়িয়ে সংসার চালাচ্ছেন।

তাড়াশ উপজেলা উরাঁও ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিরেন্দ্র নাথ বাঁরো বলেন, তাড়াশে ২০ হাজারের মতো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস। এদের প্রায় সবাই ভূমিহীন। তবে বংশগতভাবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নারীরা কুটির শিল্পের নানা রকম জিনিস তৈরি করতে পারদর্শী। মূলধন হিসেবে সরকারিভাবে সুদমুক্ত ঋণ দেয়া হলে বছরের এই সময়টাতে তাদের সমস্যায় পড়তে হতো না।

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/আরএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।