‘যে শীত পইছে গরিবের মরণ ছাড়া উপায় নাই বাহে’

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ১২:২২ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত নীলফামারীর ডিমলায় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। দিন দিন কমছে তাপমাত্রা, বাড়ছে শীতের তীব্রতা। তীব্র শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। ঠান্ডায় তারা কাজে বের হতে পারছেন না।

ডিমলা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মাহামুদুল ইসলাম জানান, নীলফামারীতে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেছে যানবাহনগুলো।

এদিকে সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সকাল ৬টায় ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল থেকে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। ফলে রাতে ও সকালে তীব্র শীত অনুভূত হয়।

বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে পুরো জেলা। অনবরত ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও সূর্যের দেখা মিলছে না।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লোকমান হাকিম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এই তাপমাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে শীতের তীব্রতায় জেলার ডিমলা উপজেলার চরাঞ্চলের শীতার্ত মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। তিস্তা বেষ্টিত এসব এলাকার মানুষ চাহিদা অনুযায়ী শীতবস্ত্র পায়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। তুলনামূলকভাবে ডিমলায় শীতের প্রকোপ বেশী থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষ।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের দক্ষিণ ঝুনাগাছ চাপানি গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম (৬০) বলেন, গেলবারতো পাতেলা একখান কম্বল দিছিলো চেয়ারম্যান। এবার আশায় আছো কাহো যদি একনা কম্বল দেয়। তাহলে এবার শীতখান কোনোমতে কাটবার পাইম। আবুল কাশেমের মত অনেকেই শীতে বিপাকে পড়েছেন।

nilphamari-photo-2

উপজেলার খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের খগাখড়িবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মজিদুল ইসলাম (৫৫) বলেন, এবার যে শীত পইছে গরিবের মরণ ছাড়া উপায় নাই বাহে। প্যাটোত ভাতে জুটে না আর গরম কাপড় কোনটে পামো। মোরতো কাহো নাই একনা কম্বল কিনি দিবে।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে সরকারিভাবে ২০০ কম্বল দেয়া হয়েছে। তার ইউনিয়নের ৫ হাজার মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে কাতর হয়ে পড়েছে। সেখানে সরকারিভাবে শীতবস্ত্রের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানায়।

ডিমলায় পাঁচ হাজার ৬০০ কম্বল বিতরণের কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. নাজমুন নাহার।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এসএ হায়াত জানান, নীলফামারীতে এ পর্যন্ত তিন দফায় ৪২ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ২০ হাজার কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। দ্রুত তা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করেন।

জাহেদুল ইসলাম/আরএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।