মৃত্যুঝুঁকিতেও চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আতঙ্ক বিরাজ করছে সবার মধ্যে। এমন আতঙ্কের মাঝেও মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার অসীম কুমার সরকার। সদর হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় তিনি শিশু ওয়ার্ডের বাড়তি দায়িত্ব পালন করছেন। আতঙ্কের মাঝেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এই চিকিৎসক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দেয়ার নতুন অভিজ্ঞতার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার অসীম কুমার সরকার বলেন, একটা মাস্ক ও একটা গ্লাভস আমি নিজের টাকায় কিনেছি। অথরিটি বলছে, সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে কোনো প্রস্তুতিই ছিল না। ডাক্তাররা মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আমাদেরও পরিবার রয়েছে। আমাদের কিছু হলে তাদের কী হবে? সে চিন্তা মনে থাকলেও সেবা দিতে অনাগ্রহ দেখাননি কোনো চিকিৎসক।
তিনি বলেন, চিকিৎসক-নার্সদের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা এখনও হয়নি। এ অবস্থায়ই রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি আমরা। সদর হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে একজন করোনা সন্দেহজনক রোগী ভর্তি রয়েছেন। এখনও তার কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। আইইডিসিআরকে বলা হলেও তাদের কোনো রেসপন্স নেই। একজন ডাক্তারের ওপর ভরসা করেই অসুস্থ মানুষটি হাসপাতালে আছেন। উদ্বেগ-আতঙ্ক থাকলেও রোগীদের জীবন বাঁচানো আমাদের লক্ষ্য।
কেউ নিরাপদ নন জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, সাতক্ষীরায় করোনাভাইরাস পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় শুধু অনুমানের ওপর ভিত্তি করেই আমরা চলছি। সেজন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকলকে সচেতন হয়ে করোনা মোকাবিলা করতে হবে।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত জানান, জেলাব্যাপী বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ৯৬২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এছাড়াও সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন একজন। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত সাড়ে ৮ হাজারেরও বেশি প্রবাসীর সকলকে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
আকরামুল ইসলাম/আরএআর/এমএস