সরকারি হাসপাতালে নিম্নমানের পিপিই, বেসরকারিতে নেই

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ১০:১৩ এএম, ২৫ মার্চ ২০২০

করোনাভাইরাসে স্থবির হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। দেশের উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে এ ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত না হলেও হোমকোয়ারেন্টাইনে আছেন অনেকে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী এ জেলায়ও। আর এ আতঙ্কের মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ইতোমধ্যে সরকারি হাসপােতালের চিকিৎসক ও সেবিকাদের (নার্স) মাঝে গ্লাভস, মাস্কসহ সরবরাহ করা হয়েছে পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই)। তবে এসব পিপিইর বেশিরভাগই নিম্নমানের বলে অভিযোগ চিকিৎসকদের।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে সাধারণত কাশি বা জ্বরের লক্ষণ দেখা যায়। এদের মধ্যে অনেকে নানা কারণে সরকারি হাসপাতালে যেতে চায় না। এরা অনেকে স্থানীয় ছোট হাসপাতাল বা ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে। তবে এসকল হাসপাতাল বা ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের নেই পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই)। যার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও মানসিক চাপ নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এসব বেসকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ফলে প্রচণ্ড স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা।

শহরের গ্রিন ভিউ হাসপাতালের চিকিৎসক তন্ময় দাস জানান, আমাদের গ্লাভস, মাস্ক আর মাথার টুপি এছাড়া আর কিছু নেই। অনেক সময় আমাদের এখানে কাশি, জ্বর নিয়ে রোগী আসে। কার মধ্যে করোনাভাইরাস আছে বলা যায় না। আমাদের কিট নেই যে পরীক্ষা করব, অনুমানের উপর ভিত্তি করে আমরা চলছি।

চিকিৎসকদের দুই স্বজন তাপসী রানি দাস ও সৈয়দ কিশোর বলেন, আমরা সবাই হোম কোয়ারেন্টাইন বা সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করলেও চিকিৎসকদের কিন্তু হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার সুযোগ নেই। মহামারি ভাইরাস মোকাবিলায় একজন চিকিৎসকের ভূমিকা অনেক। তারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। অনেক সময় ভুল হলে আমাদের সন্তান, বাবা, ভাই ও বোনকে গালি দেন রোগীর স্বজনরা। তারপরও সঙ্কটময় মুহূর্তে আমাদের সন্তান, বাবা, ভাই ও বোন রোগীদের হিরোর মতো সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, পটুয়াখালীতে ২৫০ জন চিকিৎসকের জন্য পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সরবরাহ করা হয়েছে। যার অধিকাংশই নিম্নমানের। তবে কিছু যায়গায় মানসম্পন্ন না হলেও চালিয়ে নেয়ার মতো কিছু পিপিই দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক জানান, অনেক জায়গায় পিপিই অনেক খারাপ দিয়েছে আবার অনেক জায়গায় মোটামুটি ভালো দিয়েছে।

পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অনিন্দ্য জানান, একজন চিকিৎসকের ওপর ভরসা করেই অসুস্থ মানুষ হাসপাতালে আসেন। অসুস্থ মানুষকে সেবা দিয়ে সুস্থ করে তোলা আমাদের কর্তব্য। রোগীর জীবন বাঁচানো আমাদের লক্ষ্য। আতঙ্ক সবার মধ্যে থাকে। পরিবারের জন্য অনেক কষ্ট হয় তবে কিছু করার নেই। আমার কাজ আগে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের শিশু বিশেষজ্ঞ একাধিক চিকিৎসক জানান, আমাদের টাকা দিয়েছে। তা দিয়ে পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) কিনতে বলছে। কিন্তু কোথাও পিপিই তো দূরের কথা হ্যাক্সিসল, গ্লাভস পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না।

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এমএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।