পুলিশের গুলিতে একজন নিহত, ১১শ শ্রমিকের বিরুদ্ধে পুলিশেরই মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুর
প্রকাশিত: ০৮:২৪ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২০

দিনাজপুরের বিরলে রূপালী বাংলা জুট মিলে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় ১১শ শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নিহতের ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের করেনি পরিবার কিংবা শ্রমিকরা। ইতোমধ্যে নিহতের ময়নাতদন্ত
সম্পন্ন হয়েছে।

মিল মালিক বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বলেন, টাকার সংকট থাকায় বুধবার বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু শ্রমিকরা তা বুঝতে চায়নি। তারা ভাঙচুর করলে পুলিশ গুলি চালায়। তিনি আগামী রোববারের মধ্যে সমুদয় বকেয়া বেতন প্রদান করা হবে বলে শ্রমিকদের আশ্বাস দিয়েছেন।

Dinajpur-(1)

বিরল থানা পুলিশের ওসি শেখ নাসিম হাবিব জানান, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, ভাঙচুর ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ১০/১২ জনের নাম দিয়ে অজ্ঞাত আরও ১১শ শ্রমিককে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন বিরল থানা পুলিশের এসআই আব্দুল কাদের। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। একটি ইউডি মামলা দায়ের করে নিহতের ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুরের এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে ওই ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২ সদস্য বিশিষ্ট পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির প্রধান করা হয়েছে ডিএসবি’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সচিন চাকমাকে। বাকি দু’জন সদস্য হলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) হাফিজুল ইসলাম ও জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি এটিএম গোলাম রসুল। আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম ও সদস্য বিরল উপজেলা নির্বাহী জিনাত রহমান। দুটি কমিটিই আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

দিনাজপুরের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Dinajpur-(2)

প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেলে কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই বিরল উপজেলার রুপালী বাংলা জুট মিল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বক্ষোভ শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হলেও কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত হয়নি। যাতে করে শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে ভাঙচুর শুরু করে। এসময় পুলিশ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে। এতে সুরত আলী নামে একজন পান দোকানি নিহত হয়। এ সংঘর্ষের ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। আর পুলিশ দাবি করেছে, এ ঘটনায় তাদের ৬ জন সদস্য আহত হয়েছেন।

নিহত সুরত আলী বিরল পৌরসভা এলাকার হোসনা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

এমদাদুল হক মিলন/এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।