৫ হাজার মানুষের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পাঠালেন আফজাল
‘ত্রাণের কাছে মানুষ নয়, ত্রাণ যাবে ঘরে ঘরে’ স্লোগান নিয়ে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পাঁচ হাজার দরিদ্র পরিবারে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সরকারদলীয় এমপি মো. আফজাল হোসেন। সোমবার থেকে এসব খাবার মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছানো শুরু হয়েছে।
সোমবার বাজিতপুর ডিগ্রি কলেজের খোলা মাঠে খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট আলাদা করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে যানবাহনে করে পাঠানো হয় বিভিন্ন ইউনিয়নে। এরপর ইউপি চেয়ারম্যানদের নেতৃত্বে এসব খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয় দরিদ্র মানুষের ঘরে ঘরে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সারা দেশের মতো কিশোরগঞ্জে চলছে অঘোষিত লকডাউন। বাড়ছে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা। এ অবস্থায় সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ বিতরণে ঢল নামছে অভাবী মানুষের। অনেক ক্ষেত্রে ত্রাণ বিতরণে সম্ভব হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি। সেই সঙ্গে বাড়ছে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি।
এ অবস্থায় মানুষকে সমবেত না করে নিজের নির্বাচনী এলাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাঁচ হাজার পরিবারে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার ব্যতিক্রম উদ্যোগে নেন এমপি মো. আফজাল হোসেন। দলীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে চাল-ডাল-আলু-তেলসহ অন্যান্য সামগ্রী প্যাকেট করে পাঠানো হয় বিভিন্ন এলাকায়। ইউনিয়ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব খাবার পৌঁছে যায় দরিদ্র মানুষের ঘরে ঘরে। এমন উদ্যোগে খুশি সবাই। সরকারি নির্দেশ মেনে জনসমাগম এড়াতে এমপির নির্দেশে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান এলাকার জনপ্রতিনিধিরা।
বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মানুষকে ঘরে রেখে তাদের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নিয়েছেন এমপি মো. আফজাল হোসেন। ব্যক্তিগত অর্থে বাজিতপুর উপজেলার দুই হাজার দুইশ ও নিকলী উপজেলায় এক হাজার আটশ পরিবারে ১০ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, তিন কেজি আলু, এক কেজি পেঁয়াজ, আধা লিটার তেল ও একটি সাবান দেয়া হচ্ছে। বাজিতপুর উপজেলা সদর থেকে নিজের খরচে প্রতিটি ইউনিয়নে প্যাকেটগুলো পাঠানো হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে খাবারগুলো পাঠানো হয়। ইউনিয়নে যাওয়ার পর প্রতিটি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্ড মেম্বাররা এগুলো দরিদ্র মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবেন।
বাজিতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ছারোয়ার আলম বলেন, অনেক স্থানে দেখা যায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণের সময় মানুষের হুড়োহুড়ি। সামাজিক দূরত্ব মানা হয় না। এজন্য নিকলী-বাজিতপুরের এমপি আফজাল হোসেন নিজে উপস্থিত থেকে মানুষের বাড়িতে খাবার পাঠাচ্ছেন।
কিশেরগঞ্জ-৫ আসনের এমপি মো. আফজাল হোসেন বলেন, সারা বিশ্ব আজ করোনা মহামারিতে পড়েছে। বাংলাদেশেও বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। সারা দেশ লকডাউন হয়ে পড়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই ঠিকমতো খেতে পারছেন না। এ অবস্থায় সরকারের পাশাপাশি আমাদের মতো বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।
তিনি বলেন, ত্রাণ বিতরণের সময় করোনাভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এজন্য খাবারগুলো তালিকা অনুযায়ী সবার বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিকলী-বাজিতপুরে যতদিন প্রয়োজন হবে এমন খাদ্য সহায়তা চালিয়ে যাব।
নূর মোহাম্মদ/এএম/জেআইএম