গাইবান্ধায় বিদেশফেরত ৪৮৫ জন নিখোঁজ
গাইবান্ধায় বিদেশফেরত ৪৮৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। গত ৩০ মার্চ থেকে বুধবার (০৮ এপ্রিল) পর্যন্ত গত ১০ দিনেও তাদের খুঁজে পায়নি পুলিশ প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
নিখোঁজদের মধ্যে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে এই সংক্রমণ জেলাব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তাই বিদেশফেরত নিখোঁজ ব্যক্তিদের তথ্য জানাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইউএনও এবং থানা পুলিশের ওসিকে আনুরোধ জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ১ মার্চ থেকে ৯২৯ জন প্রবাসী বিভিন্ন দেশ থেকে গাইবান্ধার সাত উপজেলায় নিজ বাড়িতে এসেছেন। তাদের মধ্যে ৪৪৪ জনকে খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে ৪৮৫ জনের খোঁজ মিলছে না। তারা নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের খুঁজছে জেলা প্রশাসন।
এ অবস্থায় বিদেশফেরত ওসব ব্যক্তির খোঁজ দিতে ২১ মার্চ গাইবান্ধার জাতীয় তথ্য বাতায়নে জেলা প্রশাসন একটি নোটিশ দিয়েছে। নোটিশে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের তথ্য দিতে ইউএনও, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং থানার ওসিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পরে পুলিশ প্রশাসন তাদের জনবল ও সোর্স দিয়ে এবং স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের কর্মীদের দিয়ে খুঁজছে বিদেশফেরতদের। পাশাপাশি অন্যান্য উপায়ে সন্ধান চলছে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের। বিদেশফেরত কেউ কেউ স্বেচ্ছায় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে জানিয়েছেন। আবার প্রতিবেশীরা বিদেশফেরতদের সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। এরপরও গাইবান্ধায় বিদেশফেরত ৪৮৫ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এসব বিদেশফেরত ব্যক্তি কি অবস্থায় কোথায় আছেন তা জানা নেই কারও।
গাইবান্ধা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে সদর উপজেলার তিনজন ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার একজনকে হাসপাতালের আইসোলেশনে এবং আরেকজনকে সাদুল্লাপুর উপজেলায় আইসোলেশনে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১৭৩ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন একজন।
গাইবান্ধা যুব নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক জিয়াউল হক জনি বলেন, গাইবান্ধায় গত ২২ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মা-ছেলে। তারপর অজ্ঞাতবশত ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে মা ও ছেলের সংস্পর্শে আসা আরও তিনজনের শরীরে। তাই বিদেশফেরত যাদেরকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি তাদের মধ্যে কেউ আক্রান্ত থাকলে ভাইরাসটি অন্যদের মধ্যে ছড়ানোর আশঙ্কা আছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ বলেন, বিদেশফেরত যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তারা যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে লুকিয়ে আছেন; আমরা এমনটা মনে করছি না। কারণ আক্রান্ত হলে এখন নিজেরাই আমাদের খবর দিচ্ছেন। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। সেই সঙ্গে নিখোঁজদের খুঁজছি আমরা।
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবদুল মতিন বলেন, বিদেশফেরতদের বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন সোর্স লাগিয়ে কাজ করছে। মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিং করে তাদের খোঁজা হচ্ছে। অনেকেই নিজ বাড়িতে না গিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। যার কারণে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যাদের খুঁজে পাওয়া গেছে তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। নিখোঁজ বিদেশফেরতদের তথ্য জেলা প্রশাসন বা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানাতে এখনও অনুরোধ করছি আমরা।
জাহিদ খন্দকার/এএম/এমকেএইচ