কুষ্টিয়ায় করোনা সংক্রমিত জেলার ব্যক্তি-পরিবহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কুষ্টিয়া জেলায় প্রবেশের মহাসড়কসহ সবগুলো সড়কে সার্বক্ষণিক পাহারার জন্য তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। করোনা সংক্রমিত এলাকার কোনো ব্যক্তি বা গাড়ি যাতে এ জেলায় প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকাল থেকে এই ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে শুক্রবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে। এই সময়ের মধ্যে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সিলেট, মাদারীপুর ও গাজীপুরসহ করোনা সংক্রমিত কোনো এলাকার কোনো ব্যক্তি বা পরিবহন কুষ্টিয়ায় প্রবেশ করতে পারবে না। প্রবেশ ঠেকানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে জেলার প্রধান প্রধান প্রবেশপথে প্রতিবন্ধকতা স্থাপন করা হয়েছে। এসব স্থানে সার্বক্ষণিক তল্লাশি চৌকি বসিয়ে সতর্ক অবস্থান নেয়া হয়েছে।
তল্লাশি চৌকি বসানো এলাকাগুলো হচ্ছে- কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের সদর উপজেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সদর উপজেলার মনোহরদিয়া, কুমারখালী উপজেলার চরসাদিপুর, খোকসা উপজেলার শিমুলিয়া ও কালিতলা, কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের ভেড়ামারা উপজেলার লালন শাহ সেতু এলাকা এবং দৌলতপুর উপজেলার খলিশাকুন্ডি ও কাজীপুর এলাকা। এসব সড়ক দিয়ে ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী, পাবনা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর জেলা থেকে কুষ্টিয়ায় যাতায়াত করা হয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দৌলতপুর উপজেলার তিনটি প্রবেশ পথে ব্যারিকেড দিয়ে লকডাউন করা হয়। এর ফলে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা এবং ভেড়ামারা উপজেলার সঙ্গে সড়কপথে দৌলতপুরের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
দৌলতপুর উপজেলার খলিশাকুন্ডি ব্রিজের ওপর এবং ধর্মদহ এলাকার কাজীপুর ব্রিজের ওপর ব্যারিকেড দিয়ে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া আল্লরদর্গা বাজারে ব্যারিকেড দিয়ে পাশের ভেড়ামারা উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন জানান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার গোস্বামীদুর্গাপুরে নারায়ণগঞ্জ থেকে ৩০ পরিবার, কুমারখালী উপজেলার দুটি ইউনিয়নে নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর থেকে ১৪০ পরিবার ও দৌলতপুর উপজেলায় ৩০টি পরিবার এসে আত্মগোপন করে আছে। ওই পরিবারগুলোকে চিহ্নিতকরণের পর ওই সকল ইউনিয়ন ও গ্রামকে লকডাউন ঘোষণা করা হবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন জরুরি পরিষেবা, চিকিৎসা, ওষুধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী, কৃষিপণ্য সংশ্লিষ্ট যানবাহন ও ব্যক্তি এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।
এদিকে কুষ্টিয়া সদর ও কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) জানান, তাদের এলাকার অনেক বাসিন্দা নারায়ণগঞ্জে বাস করেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় ফিরেছেন। তাদের শনাক্ত করে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আল-মামুন সাগর/আরএআর/এমএস