ডিসির ‘মানবিক সহায়তা তহবিল’
অসহায়দের সহায়তার জন্য ‘করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মানবিক সহায়তা তহবিল’ খুলেছেন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী আবু তাহের।
ওই তহবিলে অর্থ সহায়তা দিচ্ছেন রাজনৈতিক ব্যক্তি, বেসরকারি সংস্থা ও ব্যবসায়ীরা। সেই অর্থ থেকে জেলার অসহায়দের ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির মো. সেলিম মিয়া বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ‘মানবিক সহায়তা তহবিল’ খুলেছেন জেলা প্রশাসক। ন্যাশনাল ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। যারা ব্যক্তিগত মানবিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন সে টাকাটা ওই অ্যাকাউন্টে রাখা হয়। ১ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এই টাকা থেকে এ পর্যন্ত সাত লাখ ৬০ হাজার টাকার ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে। যা থেকে দুই হাজার ২৯৮ জন মানুষ ত্রাণ পেয়েছেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ত্রাণ সহায়তা পাওয়া কাগদি দক্ষিণ পাড়া এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দি। দুইদিন ধরে ঘরে খাবার নেই। তাই ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখি দরজার সামনে খাদ্য সহায়তা নিয়ে হাজির একদল তরুণ।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহাবুর রহমান শেখ বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ত্রাণসামগ্রী বিতরণে কাজ করছি আমরা। সদর উপজেলায় যারা সোশ্যাল মিডিয়া, মুঠোফোনে ও ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চাইছেন, এরকম ৬২৪ পরিবারের বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়েছে। খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেটে রয়েছে ছয় কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি ডাল, আধা কেজি পেঁয়াজ, ২৫০ গ্রাম রসুন, এক লিটার সরিষার তেল, ১০০ গ্রাম শুকনা মরিচ ও একটি সাবান। ‘বিডি ক্লিন- শরীয়তপুর’ নামে একটি সংগঠনের ২০ জন সদস্য এ ত্রাণ বিতরণে সহায়তা করছেন।
জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, করোনাভাইরাসের সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে সারা দেশের মতো শরীয়তপুরেও যান চলাচল ও গণপরিবহন বন্ধ করা হয়েছে। জনগণকে বিনা প্রয়োজনে বাইরে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। এ অবস্থায় শ্রমজীবী মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন। তাদের ঘরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মোতাবেক সরকারি ত্রাণ সহায়তা বিতরণ অব্যাহত আছে। পাশাপাশি বেসরকারি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা থেকে প্রাপ্ত অর্থ থেকে ত্রাণসামগ্রী মোবাইল সার্ভিসের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। যারা মানবিক সহায়তা তহবিলে অর্থ দিচ্ছেন তাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি তাদের নাম ও অর্থের পরিমাণ ‘জেলা প্রশাসন শরীয়তপুর’ ফেসবুক পেজে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন প্রতিটি মানুষ যেন খাদ্য পায়। সেই কথা চিন্তা করে মানবিক সহায়তা তহবিল খুলেছি। গত ১ এপ্রিল থেকে আমার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে ও ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে যারা খাদ্য সহায়তা চেয়েছেন তাদের তালিকা অনুযায়ী খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
মো. ছগির হোসেন/এএম/জেআইএম