নির্বাচন এলেই ‘জনগণের বন্ধু’ বিপদের দিনে উধাও
রাজাপুর-কাঁঠালিয়া ও সদর-নলছিটি নিয়ে ঝালকাঠি জেলায় দুটি আসন। এ দুটি আসনে গত সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন এক ডজনেরও বেশি নেতা। করোনার ছোবলে যখন কঠিন সময় পার করছে জেলার মানুষ তখন দেখা নেই তাদের। সংকটের এ সময়ে জনসাধারণ তো দূরে থাক নেতাকর্মীদের পাশেও দাঁড়াননি মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এসব মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে জাতীয় পর্যায়ের হেভিওয়েট নেতাও রয়েছেন।
করোনা দুর্যোগে দরিদ্র নেতাকর্মীসহ জনসাধারণকে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তা করলেও উধাও সংসদ নির্বাচনের সময় মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি নেতারা।
ঝালকাঠির তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপি কর্মী মো. মনিরুজ্জামান সোহাগ জানান, যারা ঝালকাঠি জেলার দুটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন তারা করোনাভাইরাসের এত বড় বিপদেও জেলার জনগণ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশে নেই। নির্বাচন এলেই যারা পোস্টারে লেখেন জনগণের বন্ধু, কৃতী সন্তান, সমাজসেবকসহ আরও অনেক কিছু, তাদের বিবেকহীনতার রাজনীতি আজ প্রশ্নবিদ্ধ। তারা না জনগণের না বিএনপি নেতাকর্মীদের।
ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর জানান, মনোনয়নপ্রত্যাশী সবাই ঢাকায় থাকলেও আমি ঝালকাঠি থেকেই রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করি। জরুরি প্রয়োজনে মার্চ মাসের প্রথম দিকে ঢাকায় এসে লকডাউনে আটকা পড়েছি। ২৫ মার্চ থেকে ঝালকাঠিতে অঘোষিত লকডাউন শুরু হয়। সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় ঝালকাঠি আসতে পারছি না। ঝালকাঠি জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ জনসাধারণের সঙ্গে মোবাইল এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন ঝালকাঠি-০১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও জেলা বিএনপির উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম জামাল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ও জেলা বিএনপির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রফিক হাওলাদার, কেন্দ্রীয় মহিলা দল নেত্রী মমতাজ বেগম ও ছাত্রদল নেতা গোলাম আজম সৈকত।
ঝালকাঠি-২ (সদর-নলছিটি) আসনে মনোনয়প্রত্যাশী ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল বিএম কলেজের সাবেক ভিপি মাহবুবুল হক নান্নু, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য জেবা আহমেদ খান, সাবেক এমপি ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মিঞা আহমেদ কিবরিয়া, কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংসদের মহাসচিব নুরুল ইসলাম খান বাবুল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হোসেন আলী খান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর ও জেলা যুবদলের সভাপতি জিএম সবুর কামরুল।
আতিকুর রহমান/এফএ/এমকেএইচ