লকডাউনেও সচল স্কুলের বেতন
করোনাভাইরাসের কারণে থমকে গেছে জনজীবন। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রভাবে কর্ম হারিয়ে অর্থকষ্টে মানবেতর দিন কাটছে বহু মানুষের। এ অবস্থায় বিতর্কিত এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেন। স্কুল বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের বেতন আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার অনলাইনে এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশটি নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় বইছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১১ এপ্রিল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এই লকডাউনের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের স্কুলে গিয়ে বেতন পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।
স্কুলের অধ্যক্ষ সালমা বারী স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, আগামী ১০ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত (শুক্রবার ব্যতিত) প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছাত্র/ছাত্রীদের বেতন গ্রহণ করা হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একাধিক কাউন্টারে শুধু অভিভাবকরা এসে বকেয়াসহ মে মাসের বেতন পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংকটকালে স্কুলের এমন নোটিশকে কাণ্ডজ্ঞানহীন মনে করছেন অভিভাবকরা। যেখানে মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে কর্মক্ষেত্রে যেতে পারছেন না, আয়-রোজগার সবকিছু বন্ধ রয়েছে সেখানে বেতন পরিশোধের নোটিশ দেয়ার বিষয়টিকে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখছেন তারা।
নোটিশের বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
হোসনে আরা আক্তার নামে এক অভিভাবক জানান, পরিবার চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় বেতন পরিশোধ করা আমাদের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না।
হামজা ইসলাম হেনা নামে আরেক অভিভাবক জানান, তার স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। করোনাভাইরাসের কারণে নিয়মিত বেতন হচ্ছে না। তাই ছেলের স্কুলের বেতন পরিশোধের বিষয়টি নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছেন। এ অবস্থায় স্কুল কর্তৃপক্ষকে তাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেনের অধ্যক্ষ সালমা বারী বলেন, অনেক অভিভাবক বকেয়া বেতন পরিশোধ করার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। আমি বলেছি বিচ্ছিন্নভাবে নেব না, যদি কেউ আসেন তাহলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নেব। কিন্তু বেতন দিতেই হবে বিষয়টি এমন না, বেতন না দিলে কোনো শিক্ষার্থীর নাম কাটা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে আমরা অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছি। নোটিশটি আমরা অনলাইনেই দিয়েছি, বাইরে কোথাও দেইনি।
আজিজুল সঞ্চয়/এফএ/পিআর