রাজশাহীতে আম নামানো শুরু, নেই সেই ব্যস্ততা
শুরু হয়েছে মধু মাস জ্যৈষ্ঠ। জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী আজ (১৫ মে) থেকেই নামানো যাবে গুটি জাতের আম। তবে রাজশাহীর আম বাগানগুলোতে এখনও সেভাবে আম পাকতে শুরু করেনি।
রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুটি আমের কেবল আঁটি হয়েছে। পরিপক্ব হয়নি। তাই চাষিরা আম নামাচ্ছেন না। ব্যতিক্রম দু-একজন। এখন করোনা সংকটকালে বাজার না পাওয়ার আশঙ্কায় চাষিদের তড়িঘড়ি আম নামানোরও ব্যস্ততা নেই। অথচ আগের বছরগুলোতে চাষিরা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করতেন। বাগানে বাগানে শুরু হতো আম নামানোর উৎসব।
রাজশাহীর পবা উপজেলার আলীমগঞ্জ এলাকার চাষি আবুল কালাম বলেন, আমার গুটি আম খুব বেশি নেই। প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী এখন গুটি আম পাড়া যাবে। তবে আম এখনও পাড়ার মতো হয়নি। গুটি আম আরও অন্তত ১০-১৫ দিন পর নামানোর উপযুক্ত হবে।
তিনি বলেন, এবার বাজারের যে অবস্থা তাতে আম কখন নামালে ঠিক হবে সেটাও বুঝতে পারছি না। আবার এবার আম পাড়ার সময়টাও ঠিকমতো নির্ধারণ হয়নি। আম পাড়ার সময় কিছুটা আগেই নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, কৃষি বিভাগ, ফল গবেষণা কেন্দ্র এবং চাষিদের মতামতের ভিত্তিতেই সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। এখন আম যদি না পাকে তাহলে চাষিরা নামাবেন না। কেউ যদি অপরিপক্ব আম নামান তাহলে আমরা দেখব তিনি আমগুলো কেন নামাচ্ছেন। যদি আচারের জন্য নামান তাহলে কিছু বলার নেই। কিন্তু পাকানোর উদ্দেশ্যে আম নামাতে হলে পরিপক্ব অবস্থায়ই নামাতে হবে। আমরা এ বিষয়টি এখন নিশ্চিত করব।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দিন বলেন, গত বছরও আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু চাষিরা আম হাতে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে বললেন, আম পেকে গেছে, তারা নামাতে পারছেন না সময় বেঁধে দেয়ার কারণে। তাই এবার একটু আগেই সময় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আবহাওয়া ঠান্ডা। সে জন্য আম না-ও পাকতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, রাজশাহীর কোথাও গাছে আম পেকেছে বলে তিনি খবর পাননি।
চাষিদের আম নিয়ে শঙ্কার বিষয়ে বলেন, কৃষিপণ্য লকডাউনের বাইরে। তাই বাজারজাত করতে সমস্যা হবে না। গাছে যখন আম পাকবে তখনই চাষিরা বাজারে নিতে পারবেন।
রাজশাহী জেলায় আম বাগান রয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। শুক্রবার (১৫ মে) থেকে গুটি আম পাড়ার সময় শুরু হয়েছে। ২০ মে থেকে গোপালভোগ নামাতে পারবেন চাষিরা। এছাড়া রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা ২৫ মে, হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ও ফজলি ১৫ জুন থেকে নামানো যাবে। সব শেষে ১০ জুলাই থেকে নামবে আশ্বিনা এবং বারী আম-৪ জাতের আম। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন এই সময় নির্ধারণ করে দেয়।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/এমকেএইচ