করোনা জয় করে মুক্ত হলেন স্বাস্থ্যকর্মী সুমন, জানালেন অভিজ্ঞতা
সাতক্ষীরার প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী মাহমুদুর রহমান সুমন এখন করোনামুক্ত। পরপর দুইবার নমুনা পরীক্ষার পর রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাকে করোনামুক্ত ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। একই সঙ্গে শহরের উত্তর কাটিয়ায় তার বাসার লকডাউন প্রত্যাহার করে নিয়েছে প্রশাসন।
শুক্রবার (১৫ মে) বেলা ১১ টার দিকে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান করোনা জয়ী স্বাস্থ্যকর্মী সুমনকে দেখতে যান এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এছাড়াও ওই স্বাস্থ্যকর্মীর বাসায় যান জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল ও সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত।
মাহমুদুর রহমান সুমন যশোরের শার্শা উপজেলার মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট হিসেবে দায়িত্বরত। সাতক্ষীরা শহরের উত্তর কাটিয়া এলাকায় পরিবার নিয়ে একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন তিনি।
গত ২৬ এপ্রিল মাহমুদুর রহমান সুমনের শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। করোনা ধরা পড়ার পর উত্তর কাটিয়া এলাকার বাসাটি লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। একই সঙ্গে মাহমুদুর রহমান সুমনকে বাসায় কোয়ারেন্টাইনে রেখে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।
করোনা জয় করার পর মাহমুদুর রহমান সুমন তার অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি বলেন, মূলত নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়েই আমি করোনা আক্রান্ত হয়েছি। কোয়ারেন্টাইনে বন্দিজীবন কেটেছে অনেকটা জেলখানার মত। ঘরে একা থাকা। পরিবারের কেউ পাশে না আসা। দূর থেকে খাবার দেয়া। সব মিলিয়ে আমার মনে হয়েছে আমি জেলখানাতে আছি।
মাহমুদুর রহমান সুমন বলেন, প্রথম দিকে ভয় হতো কি হবে আমার। তবে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যাই। পরিবারের কেউ পাশে আসতে পারতো না। আমিও আসতে নিষেধ করতাম। বাইরে যেতে পারিনি অনেক খারাপ লেগেছে। তবে আজ (শুক্রবার) আমাকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। মনে হচ্ছে, জেলখানা থেকে মুক্তি পেয়েছি। অনেক ভালো লাগছে। আমি অনেক খুশি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই তারা সার্বক্ষণিক আমার খোঁজখবর রেখেছেন।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরার প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী সুমন এখন পুরোপুরি করোনামুক্ত। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার সামগ্রী দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। তার বাড়ির লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৬ এপ্রিল করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়ার ১৪ দিন পর আমরা প্রথম নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠাই। রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপর পুনরায় আবারও নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়। সে রিপোর্টও করোনা নেগেটিভ এসেছে। পরপর দুটি রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় শুক্রবার সকালে স্বাস্থ্যকর্মী সুমনকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।
আকরামুল ইসলাম/আরএআর/এমকেএইচ