দ্বিগুণ ভাড়া নেয়ার পরও আগের মতো যাত্রীবোঝাই
পাবনায় করোনাভাইরাসের সামাজিক সংক্রমণ বাড়ছে। গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। জেলায় রোববার (৩১ মে) পর্যন্ত ৩৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের ৯০ শতাংশ শহরের বাইরের অর্থাৎ গ্রামের। শুধু তাই নয়, করোনার সংক্রমণ চলছে জেলার নয় উপজেলায়। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এমনটি হয়েছে।
যদিও প্রথম থেকেই পাবনায় সংক্রমণ কম থাকায় সংশ্লিষ্ট সবাই আশাবাদী ছিলেন, পাবনাকে অনেকটাই নিরাপদ রাখা যাবে। কিন্তু জনসচেতনতার অভাবে তা আর হয়নি।
রোববার (৩১ মে) সরকারি-বেসরকারি সব অফিস খুলছে। চালু হয়েছে গণপরিবহন। দোকানপাট ব্যবসায়প্রতিষ্ঠানও খোলা হয়েছে। অফিস-আদালতে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানা হলেও গণপরিবহনে এবং হাটবাজারে মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি।
রোববার পাবনার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে গণপরিবহন চালু হয়। বাসে অর্ধেক যাত্রী নেয়ার কথা থাকলেও তা মানেনি মালিকপক্ষ। তারা বলছেন, এতে লোকসানে পড়তে হবে তাদের।
এদিকে, গণপরিবহনে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নেয়া হচ্ছে দ্বিগুণ। তবে আগের মতোই যাত্রীবোঝাই করা হচ্ছে। সিএনজি, অটোরিকশাতেও সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও একই অবস্থা।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, পাবনায গত ৪৮ ঘণ্টায় নতুন করে সাতজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ৩৯ জন। নতুন যারা আক্রান্ত হয়েছেন এদের মধ্যে জেলার ভাঙ্গুড়ায় দুইজন, সদরের একজন, সুজানগরের একজন, ফরিদপুরের একজন, ঈশ্বরদীর দুইজন।
পাবনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. কেএম আবু জাফর বলেন, আমরা শুরু থেকেই অনেক জেলার চেয়ে নিরাপদ ছিলাম। জনসচেতনতার জন্য ব্যাপক তৎপরতা চালানো হয়। প্রশাসনও তৎপর ছিল। কিন্তু জনসাধারণ, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা কথা রাখেনি। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে বেশ কিছু মানুষ এসে সংক্রমণ ছড়িয়েছেন।
তিনি বলেন, এখন সামাজিক সংক্রমণ চলছে। যাদের করোনা শনাক্ত হয়েছে তাদের ৯০ শতাংশ শহরের বাইরের বা গ্রামের। আমরা চেষ্টা করছি স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে পরিস্থিতি সহনীয় রাখার। পাবনায় শনিবার পর্যন্ত করোনা উপসর্গ থাকায় এক হাজার ৪৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য রাজশাহীতে পাঠানো হয়। এক হাজার ১৩৭ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩৯ জনের পজিটিভ এসেছে।
পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশের একার পক্ষে সবকিছু সামাল দেয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সবারই দায়িত্ব রয়েছে। পুলিশ ফ্রন্ট লাইনে রয়েছে। তারা কাজ করতে গিয়ে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। এরপরও রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ।
তিনি বলেন, গণপরিবহনসহ জনসমাগম ঠেকাতে পুলিশ কঠোর প্রস্তুতি নিয়েছে। এজন্য মোড়ে মোড়ে চেকপোস্টসহ বিশেষ পাহারা বসানো হয়েছে। পাবনার প্রধান শহরে চেকপোস্টসহ শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ সরকারি নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একে জামান/এএম/এমকেএইচ